বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যরা বিদেশ থাকেন। তারা সেখানে কী করেন? কোথায় চাকরি করেন? কী তাদের টাকার উৎস? কাউকে জানানো হয়নি। দেশের টাকা লুট করে তারা বিলাসিতা করছেন। হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে বিজনেস করছেন। কোথায় পেয়েছেন সেই টাকা?
তিনি বলেন, সরকার মেগা প্রজেক্টের নামে লক্ষ কোটি পাচার করেছে। এটি আমার কথা নয়। সালমান এফ রহমানও জানিয়েছেন কিভাবে শেখ হাসিনা লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছেন।
আজ সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী প্রচার দল আয়োজিত দ্বিতীয় দফা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে বন্যার্তদের মাঝে সহস্রাধিক পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মাহফুজ কবির মুক্তা।
রিজভী বলেন, নিজেদের পার্সেন্টেজ নিশ্চিত করে নির্দিষ্ট ব্যবসায়ীকে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছিলো। গণমাধ্যমকে জোর করে নিজেদের করে নেওয়া হয়েছে। সত্যিকারের মালিককে জেলে ঢুকিয়ে আওয়ামী লীগের লোককে বসানো হয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হত্যা করা হয়েছে হাজারও ছাত্র-জনতাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের কাজ চালিয়ে যাও। আমি তোমাদের প্রোটেকশন দেবো। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্দ্বিধায় গুলি চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। গণহত্যা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, এরাতো আইয়ূব বা ইয়াহিয়া খানের সেনাবাহিনী নয়, তাদের এতটুকু করুনা হলো না দেশের মানুষের ওপর গুলি চালাতে? আবু সাঈদ, মুগ্ধর মতো মেধাবী ছেলে, ছয় বছরের শিশু সন্তানকেও তারা গুলি করে ঝাঁঝরা করে দিয়েছে।
ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারাতো গণতান্ত্রিক দেশ। যে শেখ হাসিনা দেশের শিশু-কিশোরদের হত্যা করেছে, তারপরও সেই হাসিনাকে আপনারা সমর্থন দিয়ে গেলেন? যে শেখ হাসিনা দেশ থেকে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তারপরও তাকে আপনারা সমর্থন দিয়ে গেলেন? শেখ হাসিনা সরকার বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রের সব স্তম্ভ ধ্বংস করেছে, জনগণের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। নিজেদের লোকদের বিচারপতি, নির্বাচন কমিশনারসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে দেশকে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে, এমন একটি ব্যক্তিকে আপনারা আশ্রয় দিলেন? আপনারা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়েও বাংলাদেশের জনগণের জন্য আপনাদের একটুও মায়া হলো না? আপনাদের মানবতার অধিকার জাগ্রত হলো না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, অনেকে বলেন-আপনারা কেনো ভারতের সমালোচনা করেন? যে ব্যক্তি দেশের অগণিত মানুষকে হত্যা করলো, রাষ্ট্রকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করলো, আজকে তাকেই আপনারা সমর্থন করছেন। তাহলে মানুষ কি করে বুঝবে ভারত বাংলাদেশের বন্ধু? আসলে ভারতের বাংলাদেশ বা এদেশের জনগণের প্রয়োজন নেই, তাদের প্রয়োজন শেখ হাসিনাকে। কারণ, তাকে দিয়ে ভারত তাদের ফায়দা লুটতে পারে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা আন্দোলন করেছি কিন্তু শেখ হাসিনার ভয়ে তার কাছে আত্মসমর্পণ করিনি। শেখ হাসিনা আমাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন, আমরা কারাগার থেকে বের হয়ে আবার এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে মুক্তকণ্ঠে প্রতিবাদ করেছি। আন্দোলন থেকে আমরা পিছপা হইনি।
প্রচার দলের সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেনের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সফু, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল, ডিইউজের সহ সভাপতি রাশেদুল হক, প্রচার দলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ওয়াকিদুজ্জমান ডাবলু, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক রুহুল আমিন, কেন্দ্রীয় নেতা সোহেল রানা প্রমুখ।
একুশে সংবাদ/র.ব/এন