বাড়ছে ব্যাংক ঋণের সুদহার। ফেব্রুয়ারিতে এই ঋণে গ্রাহকদের গুনতে হবে সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ সুদ। এতে ব্যবসার খরচ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পণ্যের মূল্যও বাড়ার শঙ্কায় ব্যবসায়ী নেতারা। এদিকে, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়লেও ক্ষয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের। অর্থপাচারই যার মূল কারণ বলছেন বিশ্লেষকরা।
ডলার সংকটে দীর্ঘদিন ধরেই প্রয়োজনীয় ঋণপত্র খুলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। যার প্রভাব পড়ছে পণ্য মূল্যে। প্রায় দুই বছর ধরে থাকা চড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে একের পর এক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তবু সেসবের প্রভাব পড়েনি বাজারে।
এমন পরিস্থিতিতে নতুন বছরের প্রথম মুদ্রানীতিতেও পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাড়ানো হয় নীতি সুদহার। কমে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ। তবে সেই প্রভাব পড়ার আগেই ব্যবসায়ীদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে ব্যাংক ঋণের সুদহার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, জানুয়ারি পর্যন্ত সবশেষ ৬ মাসের ট্রেজারি বিল-বন্ডের গড় হার বা স্মার্ট ছিল ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এর সঙ্গে পৌনে ৪ শতাংশ যোগ করে ফেব্রুয়ারিতে ভোক্তাদের জন্য তা দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি আমিন হেলালী বলেন, সুদহার বাড়ায় পণ্যের দরও বেড়ে যাচ্ছে। ফলে সেটা বাস্তবসম্মত কিংবা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে কি না, তা দেখা দরকার। আর যারা অসাধু উপায়ে পণ্যের মজুত বাড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিকে কয়েক মাস নেতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকলেও জানুয়ারিতে সামান্য বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। বছরের প্রথম মাসে এই অংক ২ বিলিয়ন ছাড়ালেও তাতে থামানো যাচ্ছে না বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্ষয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতিতে যা আবারো নেমেছে ২০ বিলিয়নের নিচে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, এটার মূল কারণ অর্থপাচার। বাংলাদেশ থেকে বড় একটা অংশ অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। এটা আমাদের একধরনের সামাজিক ব্যাধি। বিভিন্নভাবে যা উৎসাহিত হচ্ছে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২৫ থেকে ৩০ লাখ কর্মী বিদেশে গেছেন। কিন্তু সেই অনুযায়ী রেমিট্যান্স আসছে না। বাজারের সঙ্গে বিনিময় হার সমন্বয় করতে পারলে প্রবাসী আয় বাড়বে। পরিস্থিতি উত্তরণে রপ্তানি আয় বাড়ানোর বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এছাড়া নজর দেয়ার পরামর্শ অর্থপাচার ও হুন্ডি বন্ধে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :