যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ ভিসাধারী প্রায় ৫ কোটি ৫০ লাখ বিদেশির তথ্য যাচাই শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ভিসার নিয়ম ভঙ্গ বা বহিষ্কারের মতো অপরাধের প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ভিসা বাতিল কিংবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক ঘোষণায় জানান, বাণিজ্যিক ট্রাক চালকদের জন্য নতুন কর্মভিসা প্রদান আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া বার্তায় তিনি অভিযোগ করেন, বিদেশি ট্রাক চালকেরা “আমেরিকানদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে এবং স্থানীয় চালকদের জীবিকা বিপন্ন করছে।”
পররাষ্ট্র দপ্তরের লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সব ভিসাধারী ‘নিরবচ্ছিন্ন যাচাইয়ের’ আওতায় থাকবেন। ভিসা অনুমোদনের পর নতুন কোনো তথ্য পাওয়া গেলে, যা অযোগ্যতার প্রমাণ দেয়, সেই ভিসা বাতিল হবে। আর ওই ব্যক্তি যদি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন, তবে তাকে দেশ ছাড়তে হবে।
অযোগ্যতার মধ্যে পড়বে—ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে অবস্থান, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, জননিরাপত্তার জন্য হুমকি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা কিংবা কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তা।
২০২৫ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে কড়াকড়ি অভিবাসন নীতি কার্যকর হয়েছে। শুরুতে বলা হলেও যে কেবল বিপজ্জনক অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বাস্তবে বৈধ কাগজপত্রধারীদের বিরুদ্ধেও অভিযান চলছে। নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্যমতে, এ বছরই প্রায় ৪ লাখ মানুষকে বহিষ্কারের পথে রয়েছে প্রশাসন।
অভিবাসন কর্তৃপক্ষ রেস্তোরাঁ, নির্মাণকাজ, কৃষিখামার এমনকি আদালত থেকেও বৈধ কাগজপত্রধারী কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। একই সঙ্গে মানবিক কারণে দেওয়া অস্থায়ী সুরক্ষা (TPS) এবং হিউম্যানিটারিয়ান প্যারোল সীমিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা অনেক বিদেশিকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস ও কাজের সুযোগ দিয়েছিল।
শিক্ষার্থী ভিসাধারীরাও নজরদারির আওতায় রয়েছেন। পররাষ্ট্র দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৬ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে আইন ভঙ্গ, সন্ত্রাসবাদে সহায়তা বা সমর্থন। তবে কিছু ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশগ্রহণ বা মতপ্রকাশের কারণে ভিসা বাতিল হয়েছে—যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে। এমনকি এমন শিক্ষার্থীর ভিসাও বাতিল হয়েছে, যাদের কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ছিল না।
একুশে সংবাদ/চ.ট/এ.জে