মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক আরোপকে বৈদেশিক নীতির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। এবার সেই অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতিতে আনতে চেষ্টার অংশ হিসেবে ভারতের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, এই পদক্ষেপে ট্রাম্প প্রশাসন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি করলে সংশ্লিষ্ট দেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর অংশ হিসেবে বুধবার প্রথমবারের মতো ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের প্রথম আর্থিক নিষেধাজ্ঞা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপে রাশিয়ার অর্থনীতি কিছুটা চাপে পড়তে পারে, তবে ক্রেমলিন জানিয়েছে, ক্ষতি সামাল দেওয়ার প্রস্তুতি তাদের রয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার মিত্রদের ওপর এমন চাপ বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আগামী বছরের মধ্যবর্তী কংগ্রেস নির্বাচন সামনে রেখে এই পদক্ষেপ ট্রাম্পের জন্য রাজনৈতিক সংকটও তৈরি করতে পারে।
কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের রাশিয়া ও ইউরেশিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক ইউজিন রুমারের মতে, এই শুল্ক বা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পুতিনকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানোর সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। ভারত ও চীন রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ট্রেজারি কর্মকর্তা কিম্বার্লি ডোনোভান সতর্ক করেছেন, এতে ভারত ও চীনের সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্য ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বিবিসি আরও জানায়, ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রভাব কানাডার অর্থনীতিতেও পড়েছে। জুলাই মাসে দেশটিতে ৪০ হাজার ৮০০ কর্মসংস্থান কমে গেছে, যা গত আট মাসের মধ্যে শ্রমবাজারের সবচেয়ে নিম্নতম অবস্থা। উৎপাদন খাত, বিশেষ করে ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম ও গাড়ি শিল্পে নিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
শুক্রবার ট্রাম্প দাবি করেন, আমদানি পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর ফলে যুক্তরাষ্ট্র রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব সংগ্রহ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, গত জুলাই মাসে শুল্ক রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪২ শতাংশ বেশি। এপ্রিল থেকে প্রায় সব ধরনের পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ কার্যকর রয়েছে।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

