ইসরায়েলের আরোপিত সমুদ্র অবরোধ ভেঙে গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা “গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা” কোনো বাধা ছাড়াই অগ্রসর হচ্ছে। বুধবার (১ অক্টোবর) ভোরে মাগরেব শাখার মুখপাত্র ওয়ায়েল নাওয়ার জানিয়েছেন, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর একাধিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বহরকে থামানো সম্ভব হয়নি।
নাওয়ার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, প্রথমে ইসরায়েলি বাহিনী বহরের প্রধান জাহাজ ‘আলমা’-কে আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু একই সময়ে অন্যান্য জাহাজ পাশ কাটিয়ে নির্বিঘ্নে এগিয়ে যায়। পরে আবারও ‘সিরিয়াস’ নামের আরেকটি অগ্রগামী জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়, কিন্তু সেখানেও ব্যর্থ হয় ইসরায়েলি বাহিনী।
তিনি বলেন, “আজকে দখলদার বাহিনী মূল জাহাজ ‘আলমা’কে থামাতে চেয়েছিল, কিন্তু অন্য জাহাজগুলো সেটিকে পেছনে ফেলে গাজার পথে এগিয়ে যায়। পরে যখন সবাই ‘সিরিয়াস’-এর চারপাশে একত্রিত হয়, তখনও ইসরায়েলি বাহিনী একইভাবে ব্যর্থ হয়।”
তার ভাষ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি যুদ্ধজাহাজগুলো বহরকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য বিভিন্ন দিক থেকে চাপ তৈরি করে, কিন্তু অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের পথে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যেতে থাকে। তিনি এটিকে ফ্লোটিলার দৃঢ় সংকল্পের পরীক্ষা হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, “৪৭টি জাহাজ থেমে গেলেও ৪৮তম জাহাজ গাজার দিকে এগিয়েই যাবে।”
এর আগে দিনের বেলায় ফ্লোটিলার কাছাকাছি একটি বড় যুদ্ধজাহাজ ঘোরাফেরা করছিল বলে আয়োজকরা সতর্ক করেছিলেন। এ সময় আল জাজিরার একজন সংবাদদাতা জানান, ‘আলমা’ জাহাজের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ইঞ্জিন সাময়িকভাবে অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছিল। একটি ইসরায়েলি নৌযান মাত্র পাঁচ ফুট দূরত্বে চলে এসেছিল এবং নির্ধারিত নিরাপত্তা প্রটোকল মেনে অংশগ্রহণকারীরা তাদের মোবাইল ফোন সমুদ্রে ফেলে দেন। তবে কিছু সময় পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বহরটি আবারও গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।
আয়োজকদের বরাতে জানা গেছে, বর্তমানে ফ্লোটিলা গাজার উপকূল থেকে প্রায় ১২১ নটিক্যাল মাইল দূরত্বে অবস্থান করছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় এখন পর্যন্ত ৬৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। ধারাবাহিক বোমাবর্ষণে উপত্যকাটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এবং সেখানকার মানুষ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ও রোগব্যাধিতে ভুগছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

