ইরানজুড়ে টানা তৃতীয় দিনের মতো বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত ৪০৬ জন নিহত এবং আরও অন্তত ৬৫৪ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রোববার (১৫ জুন) মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস’ হতাহতের এ সংখ্যা নিশ্চিত করেছে। তবে ইরানের সরকারিভাবে এ সংক্রান্ত কোনও পূর্ণাঙ্গ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি।
এর আগে, শুক্রবার ইসরায়েল আকস্মিকভাবে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়। এতে দেশটির কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী প্রাণ হারান। এ ঘটনার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং দুই দেশের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দেয়।
ইরান দাবি করেছে, ইসরায়েল দেশটির দুটি তেল শোধনাগারে হামলা করেছে। এতে ইরানের জ্বালানি খাত মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে, যা বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েল বলছে, এই হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে বাধা দেওয়া। অঞ্চলটিতে একমাত্র অঘোষিত পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে ইসরায়েল তাদের অবস্থান বজায় রাখতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
অন্যদিকে, ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলেও প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে দেশটিতে ১৪ জন নিহত এবং ৩৯০ জন আহত হয়েছে। ইরান অন্তত ২৭০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে দাবি করা হয়েছে, যার মধ্যে ২২টি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যূহ ভেদ করে ঢুকে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটি তাদের আকাশসীমা এবং বিমানবন্দরগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, "যদি ইসরায়েলের হামলা বন্ধ হয়, আমাদের প্রতিক্রিয়াও বন্ধ হয়ে যাবে।" ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, "ইসরায়েল যদি আগ্রাসন চালিয়ে যায়, তাহলে আমাদের জবাব আরও কঠোর হবে।"
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই সংঘর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও সম্পৃক্ততা নেই। তিনি বলেন, “ইরান যদি নতুন একটি পারমাণবিক চুক্তিতে সম্মত হয়, তাহলে এই ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব।”
একুশে সংবাদ/ চ.ট/এ.জে