ভারতের মধ্যাঞ্চলে মাওবাদী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত নিরাপত্তা বাহিনীর ‘সবচেয়ে বড় অভিযান’-এ ৩১ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। ছত্তিশগড় ও তেলেঙ্গানা রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকায় চালানো এ অভিযানে অংশ নেয় প্রায় ২৬ হাজার নিরাপত্তাকর্মী।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানায়।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, তিন সপ্তাহব্যাপী চলা এই অভিযানে বিদ্রোহীদের ২১৪টি ঘাঁটি ও বাঙ্কার ধ্বংস করা হয়। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও অস্ত্র।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক পোস্টে জানান, “মাওবাদী বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কারেগুত্তালু পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ৩১ জনকে নিঃশেষ করা হয়েছে। এ অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো সদস্য হতাহত হননি— যা অত্যন্ত গর্বের বিষয়।”
১৯৬৭ সালে সূচনা হওয়া নকশাল আন্দোলন মূলত ভারতের সংখ্যালঘু ও উপজাতি জনগণের অধিকারের দাবিতে পরিচালিত এক বামপন্থী সশস্ত্র বিদ্রোহ।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, মাওবাদীরা ঐ অঞ্চলের গরিব আদিবাসীদের পক্ষে ভূমি, সম্পদ ও অধিকার রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে আসছে।
২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে এ গোষ্ঠীর সক্রিয় যোদ্ধার সংখ্যা ছিল আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ হাজার। ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী ধাপে ধাপে তাদের বিরাট অংশ নিয়ন্ত্রণে এনেছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
অমিত শাহ এই অভিযানকে “ঐতিহাসিক সাফল্য” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “মধ্য ভারতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
বিশ্লেষকদের মতে, এটি মাওবাদী বিদ্রোহ দমনে ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত অভিযানগুলোর একটি। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার প্রকৃত দাবিগুলো উপেক্ষিত হচ্ছে বলেই এসব সংঘর্ষ দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/চ.ট/এ.জে