অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ফের বোমা বর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সোমবার (১২ মে) দিনভর চালানো হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৯ জন ফিলিস্তিনি। এ নিয়ে ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫২ হাজার ৮৬২ জনে। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ জন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সি মঙ্গলবার পৃথক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু মানুষ আটকে রয়েছেন, যাদের অনেকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারী দল।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। প্রায় দুই মাস গাজায় কিছুটা শান্তি বজায় থাকলেও, মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে ফের আকাশ পথে হামলা শুরু করে দেশটি। হামাসের সঙ্গে সেনা প্রত্যাহার ইস্যুতে মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে পুনরায় বিমান হামলা চালানো হয়। গত ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই নতুন দফার আগ্রাসনে ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন আরও ২ হাজার ৭৪৯ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৬০০ জন।
এর আগে, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়া গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) বিচারের মুখোমুখি। যদিও আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়া চলমান, তবুও গাজায় নির্বিচারে হামলা বন্ধ হয়নি। ফলে বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
গাজা এখন এক গভীর মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। ধ্বংসস্তুপে পরিণত এই ভূখণ্ডে খাদ্য, চিকিৎসা ও বিশুদ্ধ পানির সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। বহু হাসপাতাল ধ্বংস হয়ে গেছে, বহু শিশু অনাথ হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, গাজা এখন এক “জীবন্ত গণকবর”।
একুশে সংবাদ/ আ.ট/এ.জে