সুদানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি প্রথাগত সোনার খনির ধসে অন্তত ১১ জন খনি শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও সাতজন। দুর্ঘটনাটি ঘটে লোহিত সাগর রাজ্যের হাওয়েদ এলাকার প্রত্যন্ত মরুভূমিতে, আতবারা ও হাইয়ার মাঝামাঝি একটি খনিতে।
রোববার (২৯ জুন) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় খনি প্রতিষ্ঠান সুদানিজ মিনারেল রিসোর্সেস কোম্পানি (এসএমআরসি)। তারা জানিয়েছে, দুর্ঘটনার শিকার কির্শ আল-ফিল খনিটি আগেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
এসএমআরসি বলেছে, খনির অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং `জীবনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি` থাকার কারণেই তাদের পূর্ব সতর্কতা ছিল। তবে সতর্কতা সত্ত্বেও খনিতে কার্যক্রম চলমান ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সুদানে বর্তমানে চলছে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ, যা তৃতীয় বছরে পড়েছে। দেশটির সেনাবাহিনী (এসএএফ) এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর মধ্যে এই সংঘাত চলমান। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দুই পক্ষের অর্থায়নের বড় উৎস হয়ে উঠেছে দেশের সোনার খাত।
সোনা ব্যবসা মূলত সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাধ্যমে পরিচালিত হলেও, আমিরাতের বিরুদ্ধে আরএসএফকে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে—যা তারা অস্বীকার করে আসছে।
জাতীয়ভাবে অর্থনীতি ভেঙে পড়া সত্ত্বেও সুদানের সেনা-সমর্থিত সরকার ২০২৪ সালে ৬৪ টন সোনা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদান বর্তমানে এই মহাদেশের অন্যতম শীর্ষ সোনা উৎপাদনকারী রাষ্ট্র।
তবে এসব সোনা বেশিরভাগই আসে ঝুঁকিপূর্ণ কারিগরি ও ক্ষুদ্র খনি থেকে, যেখানে দুর্ঘটনা প্রায় নিয়মিত। ২০২৩ সালে এমন এক খনিধসে ১৪ জন এবং ২০২১ সালে ৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছিল।
যুদ্ধ-পূর্ব সময়ে কারিগরি খনি খাতে কর্মরত ছিলেন প্রায় ২০ লাখ মানুষ। কিন্তু চলমান সংঘাতে আড়াই কোটি মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এক কোটির বেশি মানুষ, যার মধ্যে অন্তত ৪০ লাখ দেশ ছেড়েছেন।
একুশে সংবাদ/জা. নি/এ.জে