ভারতের আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রধান ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল শিগগির মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে কেজরিওয়ালের পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদে কে বসতে চলেছেন তা নিয়ে কল্পনা-জল্পনা চাউর হয়েছে। দিল্লির শিক্ষামন্ত্রী অতীশি, আম আদমি পার্টি বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজ, রাঘব চাড্ডা, কৈলাশ গাহলট ও সঞ্জয় সিংয়ের মধ্য থেকে কেউ একজন নতুন মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার কথা থাকলেও রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, চলতি বছরের নভেম্বরেই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। দিল্লির সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াও বলেছেন, কেজরিওয়াল জনগণের কাছে যাবেন এবং পুনরায় নির্বাচনের পরই আবারও শীর্ষ পদে ফিরবেন। এর কার্যকরী অর্থ হলো, সাময়িক সময়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে শীর্ষ নেতারা কেউই থাকছেন না।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নতুন মুখ্যমন্ত্রীর সময়কাল কয়েক মাস হলেও আম আদমি পার্টি চাইবে এমন একজন নেতাকে বেছে নিতে, সাধারণ জনগণ ও দলের মধ্যে যার শক্ত অবস্থান ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রথমেই দিল্লির মন্ত্রী অতীশি মারলেনার নাম সামনে আসছে। তিনি দিল্লির শিক্ষা ও গণপূর্তের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় সামলাচ্ছেন। অক্সফোর্ড থেকে পাস করা এই রাজনীতিবিদ দিল্লির স্কুলে শিক্ষার পরিবর্তনের জন্য আম আদমি পার্টির এজেন্ডা দারুণভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
দিল্লির কালকাজি থেকে নির্বাচিত এই বিধায়ক উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর মন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। তিনি কেজরিওয়াল ও সিসোদিয়া কারাগারে থাকার সময় দলের মুখপাত্র হিসেবেও কাজ করেছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্র জানাচ্ছে, আম আদমি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা অতীশির ওপর অনেক আস্থা রাখেন।
সম্ভাব্য অপর প্রার্থী হলেন সৌরভ ভরদ্বাজ। তিনি গ্রেটার কৈলাস থেকে তিনবারের নির্বাচিত বিধায়ক এবং কেজরিওয়াল সরকারের আমলে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় সামলেছেন। সিসোদিয়ার গ্রেপ্তারের পরে তাকেও মন্ত্রী করা হয়। ভরদ্বাজ শিক্ষাগত দিক থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ৪৯ দিনের সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন। এএপির জাতীয় মুখপাত্র এবং দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনিও দলের অবস্থান প্রকাশ করছেন।
আম আদমি পার্টির জাতীয় কার্যনির্বাহী ও রাজনীতিবিষয়ক কমিটির সদস্য রাঘব চাড্ডা বর্তমানে ভারতের রাজ্যসভার সদস্য। রাজনীতিতে যোগ দেয়ার আগে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করা এই নেতা দলের যাত্রা শুরুর পর থেকেই কেজরিওয়ালের সঙ্গে আছেন। চাড্ডা রাজিন্দর নগর থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন এবং ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পাঞ্জাবে আম আদমি পার্টির ব্যাপক বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনিও দিল্লির মসনদে বসার দৌড়ে এগিয়ে আছেন।
পেশায় আইনজীবী কৈলাস গেহলট বর্তমানে দিল্লির পরিবহন, অর্থ ও স্বরাষ্ট্রের মতো মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। ৫০ বছর বয়সী এই নেতা ২০১৫ সাল থেকে দিল্লির নাজাফগড়ের বিধায়ক নির্বাচিত হন। তিনিও মুখ্যমন্ত্রী পদে আস্তে পারেন বলে ধরনা করা হচ্ছে।
কেজরিওয়ালের পদত্যাগের পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে যারা আছেন, তাদের মধ্যে সঞ্জয় সিংয়ের নামও শোনা যাচ্ছে। ২০১৮ সাল থেকে রাজ্যসভার সদস্য তিনি। সঞ্জয় সিং এএপির অন্যতম বিশিষ্ট মুখ। ৫২ বছর বয়সী এই নেতা দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন। তিনি দলের জাতীয় নির্বাহী ও রাজনীতিবিষয়ক কমিটির সদস্য।
একুশে সংবাদ/২৪/ট/এন
আপনার মতামত লিখুন :