যুক্তরাজ্যের সাউথপোর্টে তিন শিশু নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। কট্টর ডানপন্থিদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে দেশটিতে। এ ঘটনায় ১৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে আজ সোমবার বৈঠকে জরুরি বৈঠকে বসছেন কিয়ার স্টারমার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গতকাল রোববার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, যারা এই সহিংসতায় অংশ নিচ্ছে তারা অনুশোচনা করবে। এই দেশের মানুষের নিরাপদ থাকার অধিকার আছে। এরপরেও আমরা মুসলিম সম্প্রদায়কে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছি, মসজিদে হামলা করছি।
গত ২৯ জুলাই যুক্তরাজ্যের সাউথপোর্টে একটি নাচের ক্লাসে ১৭ বছরের যুবক এলেক্স রুদাকুবানারের ছুরি হামলায় তিন শিশু নিহত হয়। শিশুদের সবার বয়স ৬ থেকে ৯ বছরের মধ্যে।
এছাড়া হামলায় আহত হয়েছে আরও সাতজন। এ ঘটনায় পুরো যুক্তরাজ্য শঙ্কিত হয়ে ওঠে। এ ঘটনার সন্দেহভাজন হিসাবে পুলিশ ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় আইন অনুযায়ী প্রথমে পুলিশ তার নাম প্রকাশ করেনি।
এই সুযোগে সামাজিকমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন একজন ‘উগ্র ইসলামপন্থি অভিবাসী’। এই গুজবকে কেন্দ্র করে অভিবাসনবিরোধীরা অন্য এলাকা থেকে সাউথপোর্টে গিয়ে জড়ো হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায় ও একটি মসজিদে আক্রমণ করে। এ দাঙ্গা ও বিক্ষোভ পরপর দুদিন ধরে চলে।
মূলত বুধবার রাত থেকে সান্দারল্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বাধে। পরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়াও তারা পুলিশের ওপর বিয়ারের বোতল এবং পাথর ছুড়ে এবং গাড়িতে আগুন দেয়। বিবিসি বলেছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এ সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে ‘কট্টর ডানদের ঘৃণা’কে এ ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন।
সংঘাতের শেষ দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেছেন, রাস্তায় আইনশৃঙ্খলার লঙ্ঘন ঠেকাতে যুক্তরাজ্যের পুলিশকে আরও বেশি ক্ষমতা দেওয়া হবে। সেসঙ্গে নাগরিকদের সতর্কও করেছেন তিনি। এদিকে বিক্ষোভকারীরা অনলাইনে সান্ডারল্যান্ড, বেলফাস্ট, কার্ডিফ, লিভারপুল, ম্যানচেস্টারসহ বিভিন্ন শহরে আগামী দিনগুলোতে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে।
প্রচারণাকারী গোষ্ঠী ‘হোপ নট হেইট’ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সাউথপোর্টে যে দাঙ্গা হয়েছে তা ব্যাপক গুজব ছড়ানোর ফল। অনলাইনে এর অধিকাংশই ছড়িয়েছে কট্টর ডানপন্থি অ্যাকাউন্টগুলো থেকে। ওই গুজবে বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন একজন শরণার্থী অথবা অভিবাসী।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :