ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একটি খসড়া পরিকল্পনায় সম্মতি জানিয়েছে ইসরায়েলে। ২ জুন এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর উপদেষ্টা ওফির ফাল্ক। তিনি বলেছেন, যুদ্ধ শেষে গাজা পরিচালনা নিয়ে বাইডেনের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেলআবিব। তবে তা চূড়ান্ত করতে আরও সময় প্রয়োজন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফাল্ক বলেছেন, ‘বাইডেনের প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় সম্মতি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। তবে প্রস্তাবটি খুব ভালো নয়। কিন্তু আমরা হামাসের হাতে বন্দি থাকা সব জিম্মির মুক্তি চাই।’
তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের শর্ত নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে। তবে জিম্মি মুক্তি ও হামাস নির্মূলে ইসরায়েল অনড় থাকবে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি সীমান্তে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের হিসাবে, এই হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত ও ২৫০ জনকে জিম্মি করেছে হামাস। এরপর থেকে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। চলমান আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৩৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
এদিকে, গাজায় বেসামরিক হত্যার ঘটনায় ইসরায়েলি সরকারকে প্রকাশ্য সমর্থন দেওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র নিন্দার মুখোমুখি হচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় যুদ্ধ বন্ধে শুক্রবার নেতানিয়াহু সরকারকে তিন ধাপের একটি খসড়া পরিকল্পনার প্রস্তাব দিয়েছেন বাইডেন।
এতে বলা হয়, প্রথম ধাপে যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি হামাসের হাতে বন্দি জিম্মিদের একাংশকে মুক্তি দেওয়া হবে। দ্বিতীয় ধাপে বাকি জিম্মিদের মুক্তি ও স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় বসবে দুই পক্ষ।
প্রস্তাব অনুযায়ী, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অন্যতম ভূমিকা রাখবে হামাস। যা হামাস নির্মূলে তেলআবিবের পরিকল্পনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
নেতানিয়াহুর অনড় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে ফাল্ক বলেন, ‘আমাদের সব শর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত গাজায় কোনও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে না।’
গত কয়েক মাস ধরেই জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির একাধিক প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে আসছেন বাইডেন। তবে ওই প্রস্তাবগুলোর বেশিরভাগ বাস্তবায়িত হয়নি। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে বাইডেন বলেছিলেন, পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে যুদ্ধ বিরতিতে ইসরায়েল সম্মতি জানিয়েছে। অবশ্য তা কার্যকর করেনি তেলআবিব।
হামাস বলে আসছে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির রূপরেখা ছাড়া তারা কোনও জিম্মিদের মুক্তি দেবে না। ইসরায়েল সব জিম্মির মুক্তি ও হামাসকে নির্মূলের আগ পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধে নারাজ।
একুশে সংবাদ/বা.ট্রি./ এসএডি
আপনার মতামত লিখুন :