লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন ইউনিফিলের (UNIFIL) নিকটবর্তী এলাকায় নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে নিরাপত্তা পরিষদের ১৭০১ নম্বর প্রস্তাবের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে ইসরাইলকে সতর্ক করেছে।
শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে দক্ষিণ লেবাননে ইউনিফিলের দায়িত্বাধীন অঞ্চলে ধারাবাহিক কয়েকটি বিমান হামলা লক্ষ্য করেন শান্তিরক্ষীরা।
ডুজারিক বলেন, লেবাননের সেনাবাহিনী যখন দক্ষিণাঞ্চলে অবৈধ অস্ত্র ও স্থাপনা শনাক্তের অভিযানে নেমেছে, তখনই এই হামলা ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “ইসরাইলের এই আচরণ নিরাপত্তা পরিষদের ১৭০১ প্রস্তাবের সরাসরি লঙ্ঘন। আমরা ইসরাইলি বাহিনীকে বিদ্যমান যোগাযোগ ও সমন্বয় পদ্ধতি ব্যবহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার বিনত জবেইল এলাকায় মোটরবাইকে সওয়ার ছয়জন ব্যক্তি ইউনিফিলের একটি টহলযানের দিকে গুলি ছোড়ে। ডুজারিক বলেন, শান্তিরক্ষীদের ওপর এই ধরনের হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং ১৭০১ প্রস্তাবের গুরুতর লঙ্ঘন।
২০০৬ সালে ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের পর সংঘাত থামাতে নিরাপত্তা পরিষদ এ প্রস্তাব গ্রহণ করে। এর মাধ্যমে লিতানি নদী থেকে ব্লু লাইন পর্যন্ত অঞ্চলকে অস্ত্রমুক্ত রাখার আহ্বান জানানো হয়।
জাতিসংঘ লেবাননকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব, পাশাপাশি ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও দোষীদের বিচারে আনার দাবি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ লেবাননের অন্তত তিনটি এলাকায় ইসরাইলি বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও হতাহতের কোনো তথ্য মেলেনি।
বিবিসি জানিয়েছে, কয়েক দশক পর ইসরাইল ও লেবাননের মধ্যে প্রথম সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার এক দিনেরও কম সময়ের মধ্যে এই নতুন হামলা শুরু হয়। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচাই আদ্রেয়ি জেবা ও আল-মাজাদেল এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনার ঘণ্টাখানেক পরই বিমান হামলা চালানো হয়।
লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে ছিল মাহরুনা গ্রাম, টায়ারের আল-মাজাদেল, নাবাতিয়ের জেবা ও নাবাতিয়ে–বিনত জবেইলের মধ্যবর্তী এলাকা বারাচিত।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালের নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরাইল প্রায় প্রতিদিনই লেবাননে হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৩০০-র বেশি মানুষ, যার মধ্যে কমপক্ষে ১২৭ জন বেসামরিক।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

