গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশি হেফাজত থেকে কোমায় নেওয়ার পর মাশা আমিনী নামে এক নারীর মৃত্যু ঘিরে ইরান জুড়ে শুরু হওয়া হিজাববিরোধী বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহিংসতায় অন্তত ১৩৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছে নরওয়ে ভিত্তিক এনজিও ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)।
সোমবার (৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
আইএইচআর বলছে, সরকারি আইনশৃঙ্খলা-বাহিনীর হাতে বিক্ষোভকারীদের এভাবে নিহত হওয়ার ঘটনা মানবতাবিরোধী অপরাধের সমতুল্য।
দেশটির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশের জাহেদান শহরে গত এক সপ্তাহ ধরা চলা বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৪১জন নিহত হয়েছে বলে দাবি মানবাধিকার সংস্থাটির।
এদিকে, পুলিশের সঙ্গে দেশটির এক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হওয়ার পর বিরাট সংখ্যাক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি পার্কিংয়ে আটকা পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তেহরানের শরিফ ইউনিভার্সিটিতে পুলিশ গুলি ছোঁড়ার পর শিক্ষার্থীরা দৌড়ে পালাচ্ছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে শরিফ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী থেকে ছাত্ররা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। দূর থেকে বন্দুকের গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইরানে পুলিশ হেফাজতে মাশা আমিনি নামে এক কুর্দি তরুণীর মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে পড়েছে পুরো দেশ।
মাশার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানে গত দুই সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চলছে। এর জেরে এখন পর্যন্ত দেড় হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
এর আগে, লন্ডন-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, তারা ইরানে হিজাববিরোধী বিক্ষোভে ৫৩ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত হয়েছে। গত সপ্তাহে ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা ফার্স নিউজ অ্যাজেন্সি বিক্ষোভে ৬০ জনের মতো মারা গেছেন বলে জানায়।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানে নারীদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। এই বিপ্লবের পর এবারই প্রথম ইরানের হিজাববিরোধী আন্দোলনকারী নারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমাবেশ হয়েছে। শনিবার বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি শহরে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ সমাবেশে লাখ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছেন।
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :