মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস পুতুলনাচের ইতিকথা এবার রূপ নিচ্ছে বড় পর্দায়। সুমন মুখার্জি পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে কুসুমের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী জয়া আহসান।
ছবির মুক্তির আগে কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক সুমন মুখার্জি, জয়া আহসান ছাড়াও প্রেসিডেন্সির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সুমিত চক্রবর্তী এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সন্দীপকুমার মণ্ডল।

আলোচনার শুরুতে পরিচালক সুমন জানান, “উপন্যাস নিয়ে বহু বিশ্লেষণ হয়েছে। আমি বরং চিত্রনাট্যের বিষয়েই কথা বললাম। যেমন ‘শরীর শরীর শরীর, তোমার মন নেই কুসুম’—এই সংলাপটি উপন্যাসে কার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়, কিন্তু সিনেমায় আমরা সেটা স্পষ্ট করে তুলে ধরেছি।”

আলোচনায় অভিনেত্রী জয়া আহসান বলেন, “সমাজে বরাবরই নারীর অবস্থানকে কামনা ও আকাঙ্ক্ষার বস্তুরূপে দেখানো হয়েছে। কিন্তু কুসুমের মধ্যে নিজস্ব চাহিদা, আকাঙ্ক্ষা রয়েছে—যা সে গোপন করে না। সে যেন খোলা পাতার বই।”

তিনি আরও বলেন, “কুসুমের দেহ, মন ও আত্মা একই সুরে বাঁধা। এইখানেই শশীর সঙ্গে তার তফাৎ। কুসুম এক স্বাধীনচেতা নারী, যে শশীর চরিত্রকেও প্রশ্ন করার সাহস রাখে। সে এক রকম সতেজ, মুক্তচিন্তার প্রতীক।”

নিজের সঙ্গে কুসুমের তুলনা প্রসঙ্গে জয়া বলেন, “আমি নিজেও হয়তো কুসুমের মতো হতে পারব না। তার মধ্যে কোনো দ্বিধা নেই। সমাজের তথাকথিত সীমারেখা বা ‘লক্ষ্মণরেখা’ কুসুম মানে না। সেই জায়গা থেকেই সে অনেক আধুনিক, অনেক সাহসী।”

তিনি উদাহরণ টানেন গ্রামীণ বাউলদের দার্শনিকতা থেকে, “দেহ, মন, আত্মা—সবই একসূত্রে বাঁধা। যা ভাঙে, তা-ই আবার নতুন সৃষ্টির উৎস।”
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে