AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

আমি খুঁজে পেয়েছি নিজের মাঝে নিজে চক্কর


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০২:১৮ পিএম, ১৪ জুন, ২০২১
আমি  খুঁজে পেয়েছি নিজের মাঝে নিজে চক্কর

অতিমারিতে সব কিছু হতাসার মাঝেও কিছু জিনিস ভালো হয়েছে। যদিও সে গুলো মার্ক করবার মতো নয়। কিন্তু ইগনোর করবার মতোও যে নয়। পরিবারের কর্তা গিন্নীদের একসাথে  অনেকটা সময় কাটাবার সুযোগ হয়েছে। সন্তানদের সময় দেবার মতো দেদার সময় পাওয়া গেছে। অসময়ে নিজেকে উল্টে পাল্টে দেখবার সুযোগ হয়েছে।  এমন অনেক কিছু হিসেব করলে লিখে ফেলতে পারবো দিস্তার পর দিস্তা। ঠিক এমন অতিমারিতেই আমি  খুঁজে পেয়েছি নিজের মাঝে নিজে চক্কর কেটে বৃত্ত আঁকা একজন মানুষ। ভীষন অন্তরমুখী একটা মানুষ। কিন্তু তার অভিজ্ঞতার ঝুলিটা কিন্তু হালকা নয় মোটেও। সে হলো সুমন। হুম আদর করে অনেকেই সুমন করেই ডাকে। পরিচিতি দেবার জন‍্য অবশ‍্য তার আরওএকটা নাম আছে, যেটাতেই সবাই চেনে ওকে। 


আলমগীর। সে শিক্ষা গুরু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের। এসব ছাড়িয়ে আমার কাছে তার সবচাইতে অপার বিশ্ময়ের বিষয় হলো সাধনার সঙ্গীতে পারদর্শীতায়  তার একাগ্রতা, কিছুটা চমকে দেবার মতো। এই অতিমারী কালেই সে লাজুক লতার আড়াল থেকে  মম মধুরও কন্ঠ খুলে গেয়ে চলেছেন গান। ঘরোয়া বৈঠকী আসরে। রীতিমতো মন ভরিয়ে প্রাণ জুড়িয়ে পয়সা অসুল  করা সব আয়োজন। সাথে থাকেন সবসময় শিব পার্বতির মতো তার  স্ত্রী। তিনিও কম যান না। মুধুকন্ঠী আর সুশ্রী। দুজনের যুগল বন্দি একেবারে সোনায় সোহাগা। আমি তাদের নিপাট ভক্ত। তোমাদের জন‍্য অপার ভালোবাসা আর শুভেচ্ছা। তোমাদের নিয়ে এই সামান‍্য লেখাটাই তোমাদের আগামীর পথ চলার জন‍্য শুভেচ্ছা হয়ে থাকুক আমার তরফ থেকে।


“লাইভে আলমগীর পারভেজের গজল সন্ধ্যা “
ঠুমরি, রাগ খাম্বাজ, তিলক কামোদ , মাতালা মিশরা , এই সব শব্দ আর সুর নিয়েই গতকাল এখানকার গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত , একটা সুর ও বাণীর মায়া ঘোরের ভেতরে কেটে গেল , একটুও ঘুম আসেনি, বরং আমি যেন একটা বহুদিন পর মন ভালো করার টনিক পেলাম বহু.... বহু দিন পর । 
সেই ছোট বেলা থেকেই আমার খেয়াল ঠুমরি গজল শোনার মতো কান তৈরী হয়েছিল , যখন আমি হয়ত গানের বাণী বুঝতে শিখিনি কিন্তু সুরের মায়ায় কান্না চুপ হয়ে যেত আমার । 


আমাকে ছেলে ভোলানো মোয়া দিয়ে যেমন বায়না মিটানো যেতো , তেমনি সুর সম্রাট মেহেদী হাসানের গজল শুনিয়ে ঘুম পাড়ানো যেতো সহজেই । এটা আব্বার মুখে শোনা । হয়ত এ কারনেই আমি হৃদয়ে সুর সম্রাটের জন্য এতোটা গভীর আবেগ অনুভব করি। সেই ছোটবেলা থেকেই মেহেদী জি'র কন্ঠেই কেবল গজল , নাজোম খেয়াল , ঠুমরি শুনে এসেছি এতো মধু আর কারও কাছে তেমন করে পাওয়া যায়নি । উনার কিছু কিছু গজল চলচ্চিত্রের পর্দায় শুনতে পেয়েছিলাম যেগুলো খুব হিট হয়েছিল , কিন্তু হতে পারে চলচ্চিত্রের জন্য গানের কথা পাল্টে দিয়ে কিছুটা সুরেরও এদিক সেদিক লক্ষ্য করা যেতো , তবুও গানগুলো কালজয়ী ,

কারন গানের কথা ও সুর মানুষের কানে আগে থেকেই মেহেদী জি  বসিয়ে রেখেছিলেন যে ! একই কন্ঠে গজল শুনতে শুনতে সেই কন্ঠটাই যেন মরমে গেঁথে আছে, কিন্তু বহুদিনের সেই মনের দেয়ালে টানানো বড় পোষ্টার সাইজ ছবির পাশে বাধ্য হোলাম , আমাদের দেশের আলমগীর পারভেজ এর ছবিটাও রাখতে , এটা আমার শ্রোতা ও ডাই হার্ট ফেনের পাগলামী বললে ভুল হবে কিন্তু ।

যারা উনার গান শোনেন নি প্লিজ শুনুন , শোনার সময় টুকু খরচা করলে আপনাকে বলতেই হবে , মেহেদী জি বেঁচে থাকলে আজ খুব খুশি হোতেন জেনে , আলমগীর পারভেজ তার যোগ্য ভক্ত শ্রোতা এবং শিষ্য বটে ।


ফেসবুকে রোজই বিজ্ঞাপণ থাকে আজকে কবিতা লাইভ কালকে কথোপকথন ,পরশু গল্পবলা, টরশুদিন মেকাপ শেখা , কিংবা মিশেল গানের আয়োজন , সত্যি বলছি এমন করে নিবিষ্ট মন নিয়ে "রসমঞ্জরী'র "পাতায় চোখ বসিয়ে রেখেছিলাম দিন ঘন্টা হিসেব করে , কবে শুনবো আলমগীর পারভেজের কন্ঠে গজল । 


সে বহুদিন আগে ছোটভাই সাদী একদিন ইনবক্স করে একটা গানের ক্লিপ পাঠালো , আমি ওপেন করতেই যেন কন্ঠের মায়া তীর কলিজায় গেঁথে গেল , বুঝলাম যে গাইছে সে সাধারণ গাইয়ে নয় , কণ্ঠে স্বয়ং বাস করেন ঈশ্বর। সরস্বতী দেবী যেন স্বয়ং পারভেজের মাথায় হাত দিয়ে রেখেছে । পুরো হিরের দ্যুতি আমি ওর কন্ঠে পেয়ে যাই । এমন করে বাংলাভাষাভাষীর একটা অল্প বয়সী ছেলের কণ্ঠে গালিবের , মেহেদী হাসান জির , গোলাম আলী জি'র গজল , বাস করে ।

খোদাপ্রদত্ত আলমগীর পারভেজ যাদুকরি কণ্ঠের ঠুমরি ও গজলের জন্যই যুৎসই যেন । তাই হয়তো পারভেজ ক্লাসিক্যাল ও গজলের প্রতি অধিকতর মনোযোগী হয়ে উঠেন। সুরের প্রতি শর্তহীন ভালোবাসা ও আনুগত্য, অবিরাম চর্চা ও অধ্যাবসায়ের ফলে পারভেজ একদিন বাংলাদেশের শাহেনশায়ে গজল হিসেবে খ্যাতি ও স্বীকৃতি অর্জন করবেন ।

তার গায়কির ঢং, আবেগ, নিজস্বধারা ও সুমিষ্ট কণ্ঠ গজলের ক্ষেত্রে এক নিজস্ব ঘরানার সৃষ্টি করে । 
গতকাল আলমগীর পারভেজ আর উনার সহধর্মিনীর যুগল কণ্ঠে লাইভে প্রায় দুঘন্টা 
স্পেশাল মেহেদী জির গান শুনবার সুযোগ করে দিয়েছিল সে , তারই ফেসবুক পেইজ ‘ রসমন্জরী’ থেকে । 
একে একে গেয়ে যান মেহেদী হাসানের বহু উল্লেখ যোগ্য গজল গুলো , ঢাকাই চলচ্চিত্র রাজা সাহেব এর ‘ঢাকো যতনা নয়ন দুহাতে’ থেকে রাফতা রাফতা , দো শারমিলি ন‍্যায়ন এমন সব গজল গুলো একের পর এক গেয়ে যায় ক্লান্তিহীন। মেহেদী হাসান  বিখ্যাত সুফী গায়িকা আবিদা কে বলেছিলেন 
‘আমি সুর দেখতে পাই।” এটা কি কোন সাধারণ কথা ? এই কথায় সুর সম্রাটের মাহাত্ম বোঝা যায় , উনি কি ছিলেন ! 


ঠিক তেমনি করে হয়ত একদিন আমাদের আলমগীর পারভেজও কিছু বলতে পারে। , 
একটা মনের কোণে অভিমানের বেলুন ফুলে উঠছে যেন ? কেন আলমগীর পারভেজ বেশী বেশী গান গাইছে না , মিডিয়াতে তার মুখ এতো পরিচিত নয় কেন ? 


কোন রিয়েলিটি শো উইন করে আসেনি বলে ! কিন্তু একজন আলমগীর পারভেজ হতে সময় লাগে , সাধনা , ধৈর্য লাগে , রাতারাতি টেলেন্ট হান্টের মঞ্চ কাঁপানো অনেক শিল্পীদের এমন ওস্তাদ দরকার ।

আলমগীর পারভেজ আমাদের দেশের সম্পদ । বৈঠকী আবহে মনের ভেতরে সুরের মায়াঘন ঘোর সব কণ্ঠে যেমন তাল আসে না , কেউ কেউ তা পারেন , আর যারা পারেন তারা সাধারণ নন , অনন্য অসাধারণ , আমার কাছে আমাদের দেশের আলমগীর পারভেজ তাদের মধ্যে একজন । 


এই গায়ককে বেশী বেশী মিডিয়া কাভারেজ দেয়া দরকার , আমাদের ছোট দেশেও সুর সম্রাট তৈরী হচ্ছে । 


গতকালকের লাইভ প্রোগ্রামের আলমগীর পারভেজের গায়কী শুনে আমার মনে মনে ওকে প্রাইড অফ পারফরম্যান্স পুরস্কার দিয়েছি , সাথে শুভকামনা তো আছেই । 


তার সহধর্মিনীর সাথে যুগল বন্দি গাওয়া শুনে 
বসির আহাম্মেদ ও উনার সহধর্মিনীর কথা মনে হচ্ছিলো , অসাধারণ ক্যামিষ্ট্রি যেন লাইভ প্রোগ্রাম কে বিশেষ মাত্রা এনে দিয়েছিল । 


দর্শক স্রোতার না না শেষ হবে না অনুষ্ঠানের এই অনুরোধকে সাথে নিয়ে , ভদ্র লেহাজি ভাষায় শেষ স্তবকের মতো একটা হির গেয়ে লাইভ অফ করে দিলেন তারা । আর আমি সুরের মায়ায় সারাটা রাত মিষ্টি একটা আমেজ নিয়ে একটা লেখা লিখে ফেললাম ।


আমি কায় মনে দোয়া করি একদিন আলমগীর পারভেজ তমঘা-ই-ইমতিয়াজ হাসিল করবে ।
ইনশাআল্লাহ!

একুশে সংবাদ

Link copied!