জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির প্রতিবাদে কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির প্রভাব সরাসরি পড়েছে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামে। শুল্কায়ন ও অন্যান্য কাস্টমস কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বন্দরে কনটেইনার জটের সৃষ্টি হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে প্রায় ৪১ হাজার টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক) কনটেইনার জমে রয়েছে। অথচ বন্দর ইয়ার্ডে কার্যকরভাবে রাখার মতো জায়গা রয়েছে ৪৫ হাজার টিইইউস পর্যন্ত। প্রতিদিন গড়ে এক হাজার টিইইউস কনটেইনার জাহাজ থেকে খালাস হচ্ছে, কিন্তু কাস্টমস কার্যক্রম না চলায় তা বন্দরের বাইরে যাচ্ছে না।
বন্দরে আমদানিকৃত কনটেইনারের প্রায় ৩০ শতাংশ তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল। ফলে কনটেইনার খালাসে বিলম্ব হওয়ায় রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে রপ্তানি আদেশ সময়মতো পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।”
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের দাবি, কনটেইনার দেরিতে খালাস হওয়ায় ডেমারেজ ও ডিটেনশন চার্জ বহুগুণ বেড়ে গেছে। অনেক কনটেইনারে চারগুণ পর্যন্ত অতিরিক্ত মাশুল গুনতে হচ্ছে।
বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, "প্রতি ঘণ্টায় কনটেইনার নামছে, কিন্তু শুল্কায়ন না হওয়ায় খালাস থমকে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যেই পুরো বন্দর কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে।"
১২ মে সরকার এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি নতুন বিভাগ গঠনের অধ্যাদেশ জারি করলে কাস্টমস কর্মকর্তারা আন্দোলনে নামেন। ২১ মে থেকে শুরু হওয়া পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির কারণে বর্তমানে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কার্যত অচল হয়ে আছে।
অর্থনীতি ও রপ্তানি খাতের বিশ্লেষকদের মতে, এই অচলাবস্থা দ্রুত নিরসন না হলে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে।
একুশে সংবাদ//ঢা.প//র.ন