ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নে দীর্ঘদিনের জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে এলাকার কয়েকজন সম্মানিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে। বিবাদীপক্ষের দাবি, প্রতিপক্ষ আবু তাহের পরিকল্পিতভাবে ঘটনা সাজিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করে তাদের হয়রানি করছেন।
স্থানীয় সূত্র ও বিবাদীপক্ষ জানায়, একই গ্রামের আবু তাহেরের সঙ্গে অভিযুক্তদের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য গ্রাম্য সালিশ ও দরবার একাধিকবার বসানো হলেও বাদীপক্ষ কোনো সমাধান মেনে নেয়নি। বরং বিরোধকে পুঁজি করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আদালতের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
বিবাদীপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ২৫ অক্টোবর ঘটনার দিন দুপুরে কোনো হামলা, লুটপাট কিংবা অস্ত্রসজ্জিত আক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। উভয় পক্ষের মধ্যে শুধু সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছিল। অভিযোগে যে বিপুল পরিমাণ গবাদিপশু, বাঁশ ও অন্যান্য মালামাল লুটের কথা বলা হয়েছে, তার কোনো বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
স্থানীয় একাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তি জানান, ভরদুপুরে একের পর এক গরু, খাদ্য ও বাঁশ কেটে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা বাস্তবসম্মত নয়। তারা আরও জানান, সাময়িকভাবে তিনটি গরু নিয়ে যাওয়া হলেও পরে গৌরীপুর থানা পুলিশ সেগুলো উদ্ধার করে বাদীপক্ষকে ফেরত দেয়। এর বাইরে অভিযোগে উল্লেখিত অন্য গরু বা সম্পদের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
সরেজমিন তদন্তে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে কোনো ভাঙচুর বা বড় ধরনের সহিংসতার আলামত পাওয়া যায়নি। বরং মামলার মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে সামাজিকভাবে হেয় করা ও আইনি হয়রানির উদ্দেশ্যেই অতিরঞ্জিত অভিযোগ আনা হয়েছে বলে তারা মনে করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম বলেন,“আমরা সমাজে সম্মানের সঙ্গে বসবাস করি। কখনো এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। জমি বিরোধের কারণে আমাদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।”
এলাকার প্রবীণ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও মনে করেন, এ মামলাটি প্রকৃত অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়; বরং দীর্ঘদিনের জমি বিরোধেরই ফল। তারা ন্যায়বিচারের স্বার্থে সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন।
বিবাদীপক্ষের দাবি, নিরপেক্ষ তদন্ত হলে মিথ্যা মামলার পেছনের আসল উদ্দেশ্য প্রকাশ পাবে এবং নির্দোষ ব্যক্তিরা আইনি হয়রানি থেকে রক্ষা পাবেন। অপরদিকে বাদী আবু তাহেরের ভাষ্য অনুযায়ী, অভিযুক্তরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনার সত্যতা কেউ ভয়ে স্বীকার করছে না।
এ বিষয়ে গৌরীপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

