খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও বিশাল জনসভা

‘অনেকেই মন্তব্য করেছেন— প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গণঅধিকারকে এমপি বানানোর জন্য যারা মাঠে নেমেছে, কোনো কারণে যদি গণঅধিকারের প্রার্থী এমপি হয়ে যায়, এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ রাস্তায় চলতে পারবে না। তাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। এমন অনেক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আছে, যাদেরকে আমরা আপনাদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের সঙ্গে রাখি না। 

তাদেরকে গণঅধিকারে নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের অতীতের কর্মকাণ্ড দেখবেন, আমাদের কর্মকাণ্ডও দেখবেন। যদি আমাদের কোনো ভুলের কারণে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকেন, তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেবেন; আর যদি তাদের আচরণে কষ্ট পেয়ে থাকেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেই সিদ্ধান্ত নেবেন।’

বুধবার বিকেল ৫টায় গলাচিপার আটখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ডাকুয়া ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত রাষ্ট্রমেরামতে ৩১ দফা বাস্তবায়ন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় অনুষ্ঠিত জনসভা ও দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন।

তিনি আরও বলেন,‘এই এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাই–বোনদের বলবো— আপনারা চিন্তা করুন, এতদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। তারা তাদের সামর্থ অনুযায়ী আপনাদের জন্য চেষ্টা করেছে— কখনো সফল হয়েছে, কখনো ব্যর্থ হয়েছে। আমরা আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছি। আমাদেরও সফলতা–ব্যর্থতা থাকতে পারে। যাকে ভোট দিলে এবং যাকে সমর্থন দিলে আপনারা এই জনপদে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারবেন, আপনার সন্তানেরা নিরাপদে স্কুলে যেতে পারবে, আপনাদের সম্পদ নিরাপদ থাকবে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নিরাপদে থাকবে— আপনারা তাদেরকেই ভোট দিবেন।’

সভায় ডাকুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. সরোয়ার খন্দোকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন—উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সিদ্দিকুর রহমান,সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুস সাত্তার হাওলাদার,সহসভাপতি খন্দকার মিজানুর রহমান,এডভোকেট হাবিবুর রহমান,যুগ্ম সম্পাদক মিয়া মো. মাসুম বিল্লাহ,
সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মশিউর রহমান শাহিন প্রমুখ।

এছাড়াও উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপি’র অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষেরা জনসভায় উপস্থিত ছিলেন।

হাসান মামুন আরও বলেন,‘রাজনীতি করি— জয়–পরাজয় যা-ই হোক, আমি ব্যক্তি হাসান মামুন আপনাদের ডাকুয়ার নাতি–ভাগ্নে হিসেবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আপনাদের পাশে থাকবো। গত ১৭ বছর আমরা আন্দোলন করেছি, নির্যাতিত হয়েছি, কারাবরণ করেছি। আলহাজ্ব শাহজাহান খান জীবন দিয়েছেন অন্য কোনো দলকে এমপি বানানোর জন্য নয়; অবশ্যই বিএনপির এমপি বানানোর জন্যই শহীদরা জীবন দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন,‘আমরা জানি গলাচিপা–দশমিনায় (পটুয়াখালী–৩) শান্তিপূর্ণ জনপদ হিসেবে ১৭ বছর ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। কখনো কখনো আওয়ামী লীগের হামলা–অত্যাচারে আমরা নির্যাতিত হয়েছি। আইনের মাধ্যমে হোক, আলোচনা–সমঝোতার মাধ্যমে হোক— আমরা এ জনপদে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আপনারা জানেন, ৫ তারিখের পরে একটি নতুন রাজনৈতিক দলের অভ্যুদয় হয়েছে। আচরণে তারা সরকারি দলের মতোই চলছে। বিভিন্ন ইউনিয়নে উসকানি দিচ্ছে, সন্ত্রাস সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। চরবিশ্বাসে আমাদের দলীয় কার্যালয় ভেঙে দিয়েছে, নেতাকর্মীদের রক্তাক্ত করেছে। আমরা ধৈর্য ধারণ করেছি। ধৈর্যের মধ্য দিয়েই আমরা জাতীয়তাবাদী দলের বিজয় ছিনিয়ে আনবো— ইনশাআল্লাহ।’

একুশে সংবাদ/এ.জে