গাজীপুরের শ্রীপুরে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর ডেনিমেক পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা হুড়োহুড়ি করে নিচে নামতে গিয়ে তিন শতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিকেরা। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল পৌনে ১১টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকায় অবস্থিত ওই কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
কারখানার শ্রমিকেরা জানান, সাততলা ভবনের ডেনিমেক কারখানায় সাত হাজারের বেশি শ্রমিক রয়েছেন। ভূমিকম্প অনুভূত হলে শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কারখানার ফায়ার অ্যালার্ম বেজে উঠলে ভয় আরও বাড়ে। দ্রুত ফ্লোর থেকে নামার সময় হুড়োহুড়িতে পড়ে গিয়ে ও পদদলিত হয়ে তিন শতাধিক শ্রমিক আহত হন।
শ্রমিকেরা আরও অভিযোগ করেন, ভয়ে সবাই নিচে নেমে আসলে কারখানার প্রধান ফটকে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা গেটে তালা লাগিয়ে রাখেন। এতে শ্রমিকদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। পরে শ্রমিকদের চিৎকার ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রধান ফটক খুলে দেওয়া হয়। শ্রমিকদের অনেকেই দৌড়ে বাইরে বের হয়ে আসেন। আহতদের স্বজনেরা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা পঙ্গু হাসপাতাল এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালগুলোতে সিট সংকট থাকায় অনেক শ্রমিককে স্বজনেরা অন্য হাসপাতালে নিতে বাধ্য হন। আশপাশের লোকজনসহ স্বেচ্ছাসেবীরা সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার সহযোগিতা করেন।
এদিকে, ডেনিমেক কারখানায় শ্রমিক আহতের খবর পেয়ে বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও গাজীপুর-৩ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে উপস্থিত হন। তিনি আহতদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাদের খোঁজখবর নেন। তিনি বলেন, “আহতদের দেখে মনে হচ্ছে তারা এই হাসপাতালেই চিকিৎসা নিতে পারবে। অযথা আতঙ্কিত হয়ে অন্য হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন নেই।” এ সময় তিনি গুরুতর আহতদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) বিজন মালাকার জানান, ডেনিমেক কারখানার ৮৩ জন শ্রমিক হাসপাতালে নিবন্ধিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫৩ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। দু’জনকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে, ৬ জনকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বেড সংকটের কারণে অনেক স্বজন আহতদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করেছেন।
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

