জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় আলু চাষি ও ব্যবসায়ীরা এবারের মৌসুমে ভয়াবহ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ভালো দামের আশায় হিমাগারে সংরক্ষণ করা আলু এখন তাদের জন্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। বাজারে দাম না বাড়া ও ক্রেতার সংকটের কারণে হিমাগারে জমে থাকা আলু বিক্রি করতে না পারায় উপজেলা জুড়ে লোকসান দেখা দিয়েছে।
উপজেলার ১১টি হিমাগারে সংরক্ষিত প্রায় ১,০৩,৯০০ টন বা ২০,৭৮,০০০ বস্তা আলুতে মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৭৭ কোটি টাকা। নভেম্বর-ডিসেম্বরে নতুন মৌসুমে আলু রোপণ শুরু হলেও পুরনো আলু এখনও হিমাগারে পড়ে রয়েছে। বাজারদরে বিক্রি করলে প্রতিটি বস্তায় অন্তত ৮৫০ টাকা ক্ষতি গুনতে হচ্ছে।
আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম আকন্দ ৪ হাজার বস্তা আলু ৬৪ লাখ টাকায় কিনে হিমাগারে রেখেছিলেন, কিন্তু বাজারে দামের পতনে বিক্রি করতে হয়েছে মাত্র ৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকায়। এতে প্রায় ৫৯ লাখ টাকার ক্ষতি গুনতে হয়েছে। অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও অনুরূপ ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমে কালাইয়ে ১২,০৫৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ১,৫০,০০০ টন আলু উৎপাদিত হয়েছিল। এর মধ্যে এক লাখ ৩,৯০০ টন আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। বর্তমানে ৭,৬৬,২০৩ বস্তা আলু হিমাগারে পড়ে আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনুর রশিদ বলেন, “এ বছর আলুর বাম্পার ফলনের কারণে সরবরাহ বেড়েছে, তাই দাম কমে গেছে। সরকার ন্যূনতম ২২ টাকা কেজি দরে আলুর মূল্য নির্ধারণ করলেও তা কার্যকর হয়নি।”
জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, “সরকারিভাবে আলু ক্রয়ের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে সিদ্ধান্ত থাকলেও এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি। তাই ক্রয় কার্যক্রম শুরু করা যায়নি।”
এদিকে, চাষি ও ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে হিমাগারে থাকা আলুর ক্ষতি এবং বাজার অনিশ্চয়তার কারণে তাদের আর্থিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

