উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁর নিয়ামতপুরে রাতভর ভারী বৃষ্টিপাতে আমন ধান ও রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দিবাগত রাতের হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় আমন ধান নুয়ে পড়েছে এবং নিচু এলাকার জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩০ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষাবাদ হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে শতাধিক হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী, যেসব জমিতে আমন ধান লালচে বর্ণ ধারণ করেছে সেসব জমি থেকে দ্রুত পানি নিষ্কাশন করতে হবে। শীষ বের হওয়ার উপক্রম হওয়া ধানের জমিতে রসের ঘাটতি পূরণের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া নুয়ে পড়া ধানে বাদামি গাছ ফড়িংয়ের আক্রমণ দেখা দিলে তা দমন করতে কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, হঠাৎ বৃষ্টিতে রবিশস্য চাষিরাও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের কৃষক এবাদুল মণ্ডল বলেন, “এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করেছি। হঠাৎ বৃষ্টিতে সব গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়ায় ধানও নুয়ে পড়েছে।”
আরেক কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, “তিন বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলুর বীজ রোপণ করেছি। কিন্তু জমিতে পানি জমে থাকায় বীজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি।”
ধানচাষি মজনু মিয়া জানান, “তিন বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। এর মধ্যে নিচু এক বিঘা জমি পুরোপুরি পানিতে ডুবে গেছে।”
কৃষক কামরুল হাসান বলেন, “১৪ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। ধান ইতোমধ্যে পেকে গেছে, কাটার অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু রাতভর বৃষ্টিতে সব ধান নুয়ে পড়েছে।”
নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, “চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। গত রাতের বৃষ্টিতে নিচু এলাকার জমিগুলো কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বিকেলের মধ্যে পানি নিষ্কাশন হয়ে যাবে। সার্বিকভাবে আমনের উৎপাদনে বড় কোনো প্রভাব পড়বে না।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

