নরসিংদীর পলাশ থানা বিএনপির সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. এরফান আলীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বুধবার (২২ অক্টোবর)। এ উপলক্ষে দলীয়ভাবে কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে আগামী শুক্রবার নিজ বাড়ি ও স্থানীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
জানা গেছে, মো. এরফান আলী ১৯৬৭ সালে ঘোড়াশাল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, নরসিংদী মহাবিদ্যালয় (বর্তমানে নরসিংদী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ) থেকে এইচএসসি ও স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে এমএ অধ্যয়ন করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং কালীগঞ্জ থানার ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রীয় রাজনীতির পটপরিবর্তনের পর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ‘জাগো দল’ গঠন করলে, তিনি জাগো যুবদলের পলাশ থানার আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করলে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের পলাশ থানা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন।
১৯৮৩ সালে সামরিক সরকারের আমলে তিনি ঘোড়াশাল অঞ্চলের আরও ১১ জনের সঙ্গে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে চার বছর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। ১৯৮৬ সালে মুক্তির পর হাজারো মানুষ তাকে বাংলাদেশ জুট মিলস গেটে উষ্ণ সংবর্ধনা দেন। সেই সংবর্ধনা তাকে রাজনীতিতে আরও অনুপ্রাণিত করে এবং তিনি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করেন।
১৯৯০ সালে পুনরায় তিনি কারারুদ্ধ হন এবং চার মাসের জন্য ডিটেনশন দেওয়া হয়। একই বছরের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এরশাদের পতনের পর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ নির্দেশে ও নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি (প্রয়াত) শামসুদ্দিন আহমেদ ইছাকের সহযোগিতায় তিনি মুক্তি পান।
মো. এরফান আলী ৯ বছর পলাশ থানা যুবদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি পলাশ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং দীর্ঘ ২৫ বছর এ দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০১২ সালে তিনি পলাশ থানা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।তিনি ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।
একুশে সংবাদ/এ.জে