শীতের আগমনী বার্তা পৌঁছেছে জীবননগর উপজেলার গ্রামাঞ্চলে। প্রতিদিন ভোরে শিশির ভেজা মাঠ আর কুয়াশাচ্ছন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয় গাছিরা হাতে দা ও দড়ি নিয়ে খেজুর গাছ ছাঁটছেন, নলি বসাচ্ছেন এবং মাটির হাঁড়ি লাগানোর কাজ করছেন। বিকেলে গাছে বাঁধা হয় রস সংগ্রহের হাঁড়ি। পরে সকাল থেকে রস সংগ্রহ ও গুড় ও পাটালি তৈরির কাজ চলে।

উথলী গ্রামের কাদের মল্লিক বলেন, “১০ দিন ধরে কাজ শুরু করেছি। খেজুরের অপ্রয়োজনীয় ডালপালা ছেঁটে নলি বসানো শেষ হয়েছে। শীঘ্রই শুরু হবে রস সংগ্রহের কাজ।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান সরকার জানান, “জেলায় এ বছর ২ লাখ ৭২ হাজার খেজুর গাছ রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ১০ কেজি গুড় পাওয়া যায়। লক্ষ্য ধরা হয়েছে ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন।”

স্থানীয়রা বলছেন, খেজুর রস থেকে তৈরি গুড়, পাটালি ও প্রাকৃতিক ভিনেগার এই অঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অঙ্গ। হেমন্তের শুরুতে বাজারে উঠে আসে এই সুস্বাদু খেজুরের গুড় ও পাটালি, যা দেশের বিভিন্ন স্থানে চাহিদা অনুসারে সরবরাহ করা হয়।
তবে গাছের কমে যাওয়া এবং অবৈধ ইটভাটা খেজুর গাছ নষ্ট হওয়ার কারণে উদ্বেগ আছে। গাছিরা জানিয়েছেন, ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে খেজুর গাছ বেশি লাগাতে হবে এবং যত্ন সহকারে চাষ করতে হবে।
শীতকালীন এই মৌসুমে প্রায় ৩০ হাজার চাষি খেজুর রস ও গুড় সংগ্রহের কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, যা গ্রামীণ জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ আয় উৎস হিসেবে গণ্য।
একুশে সংবাদ/এ.জে