জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় চাঁদা না পেয়ে ছাত্রদলের তিন নেতার ওপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ উঠেছে ইয়াকুব আলী নামে এক যুবক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে মাদারগঞ্জ পৌরসভার ব্র্যাক অফিস মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে দুজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং একজন জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক বাদী হয়ে ইয়াকুব আলীকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০–১২ জনকে আসামি করে মাদারগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আহতরা হলেন—মাদারগঞ্জ পৌরসভার বালিজুড়ী মাঠপাড়া এলাকার মৃত নুর ইসলামের ছেলে ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক, পৌরসভার জোনাইল পূজাঘাটি এলাকার শহিদুল্লাহর ছেলে মো. বিপ্লব, এবং একই এলাকার আয়ুব আলীর ছেলে মো. হাবিব মণ্ডল।
অভিযুক্ত ইয়াকুব আলী উপজেলার বালিজুড়ী বাজারের খাদ্য ব্যবসায়ী আশরাফ আলীর ছেলে। এর আগে গত ১৪ জুলাই এক ঠিকাদারের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। জামিনে মুক্তি পেয়ে সে পুনরায় চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে ফারুক মোটরসাইকেলে করে উপজেলা হাওয়াই রোড হয়ে তার প্রতিষ্ঠান পদ্মা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ব্র্যাক অফিস মোড়ে পৌঁছালে ইয়াকুব আলী ও তার সহযোগীরা তার গতিরোধ করে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ফারুক অস্বীকৃতি জানালে তারা মোটরসাইকেলের চাবি ছিনিয়ে নেয়। পরে ফারুক দৌড়ে আত্মরক্ষা করে বন্ধু ও ছোট ভাইদের ফোনে খবর দেন।
ফারুকের খবর পেয়ে তার ভাই ও বন্ধুরা ঘটনাস্থলে গেলে ইয়াকুব আলী ও তার সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়। হামলার একপর্যায়ে ইয়াকুবের হাতে থাকা ছুরি দিয়ে বিপ্লবের বুকে আঘাত করা হয়। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে হাবিবের পায়ে ও হাঁটুর ওপর ছুরি মারে ইয়াকুব। এ সময় ফারুককেও লাঠি ও রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়।
পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। বিপ্লবের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। ফারুক ও হাবিব বর্তমানে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, “গত ১৪ জুলাই চাঁদা দাবির অভিযোগে ইয়াকুব আলীকে চাকু ও কেচিসহ গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। জামিনে মুক্তি পেয়ে সে আবারও চাঁদাবাজি শুরু করে। শুক্রবার বিকেলে চাঁদা না পেয়ে ছাত্রদলের তিন নেতাকে ছুরিকাঘাত করে। এ ঘটনায় ফারুক নামে একজন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে