ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেহাল অংশ পরিদর্শনে এসে নিজেই যানজটে পড়েন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আশুগঞ্জের সোহাগপুর এলাকায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা আটকে থাকেন তিনি ও তার গাড়িবহর। পরে মোটরসাইকেলে চড়ে সরাইল-বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজটের প্রধান কারণ হিসেবে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাকে দায়ী করেন ফাওজুল কবির খান।
তিনি বলেন, “হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে না। আগে সড়কে শৃঙ্খলা আনতে হবে। এজন্য আমরা রাস্তায় ডিভাইডার স্থাপন করব।”
বর্ষাকাল বিবেচনায় নিয়ে আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইল-বিশ্বরোড পর্যন্ত অংশটি দ্রুত ঢালাই করার নির্দেশ দেন তিনি। একইসঙ্গে সরাইল-বিশ্বরোড মোড়ে একটি উড়াল সেতু নির্মাণের আশ্বাসও দেন উপদেষ্টা।
এর আগে, মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট দেখা দেয়। আশুগঞ্জের সোহাগপুর থেকে সরাইলের শাহবাজপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটারজুড়ে এই যানজটের সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইল-বিশ্বরোড পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশ আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত থাকায় সেখানে নিয়মিত সংস্কার কাজ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া আর্থিক জটিলতা ও জুলাই অভ্যুত্থানের পর ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা নিজ দেশে ফিরে যাওয়ায় প্রকল্পের কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে মহাসড়কের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে ওঠে।
পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, “যানজটের মূল কারণ ট্রাফিক শৃঙ্খলার অভাব। আমার মনে হয়েছে, শৃঙ্খলা থাকলে হয়তো আধা ঘণ্টা সময় বেশি লাগত, কিন্তু এত ভোগান্তি হতো না।”
তিনি আরও বলেন, “প্রধান সমস্যা সড়ক নয়— সবাই শুধু নতুন রাস্তা চায়। কিন্তু এভাবে রাস্তা তৈরি করতে থাকলে একসময় বাসাবাড়ি, শিল্পকারখানা এমনকি কবরস্থান রাখার জায়গাও থাকবে না। তাই সড়কের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে রেল ও নৌপথের ব্যবহার বাড়াতে হবে।”
এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা।
একুশে সংবাদ/এ.জে