হাওরের জনপদ কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতি আবর্তিত হয়েছে এক নামকে ঘিরে—অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। দলের চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা হিসেবে জনপ্রিয় হলেও সমালোচনার শিকারও হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি তাঁর পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত হওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন স্রোত বইতে শুরু করেছে।
এ পরিস্থিতিতে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত ভেবে বসে থাকা অনেকের সমীকরণ পাল্টে যাচ্ছে। আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন নতুন নতুন নাম। সর্বশেষ যোগ দিয়েছেন আরেক ফজলুর—মো. ফজলুর রহমান শিকদার।
শনিবার দুপুরে জেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি ঘোষণা দেন, তিনিও বিএনপির মনোনয়ন চাইছেন। এর মধ্য দিয়ে তালিকায় নাম উঠল আটজনের।
দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় ফজলুর রহমান শিকদার জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও জেলা আইনজীবী ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাবেক উপদেষ্টা ফজলুর রহমানের সমালোচনা করে অভিযোগ তোলেন, তাঁর কারণে ত্যাগী কর্মীরা উপেক্ষিত হয়েছেন এবং বিএনপির রাজনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, “যিনি দুর্দিনে দলকে শক্ত করে ধরতে পারেননি, তিনি আবার মনোনয়ন পেলে দলের ক্ষতি হবে। আমাদের প্রয়োজন এমন নেতৃত্ব, যে আদর্শকে ধারণ করবে।”
এছাড়া মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় আরও আছেন জাতীয়তাবাদী হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট সুরঞ্জন ঘোষ, ড্যাব নেতা অধ্যাপক ফেরদৌস আহমেদ লাকী, অবসরপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আবদুর রহিম মোল্লা, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতন, সাবেক উপসচিব জহির উদ্দিন ভূঁইয়া এবং বুয়েটের সাবেক ছাত্রদল নেতা নেসার আহমেদ।
এখন রাজনীতির মাঠে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু—‘কোন ফজলুর’ পাবেন বিএনপির মনোনয়ন? সাবেক উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, নাকি নতুন মুখ ফজলুর রহমান শিকদার? নাকি তৃতীয় কেউ হবেন দলের চূড়ান্ত প্রার্থী?
উল্লেখ্য, হাওরের এই আসনে একসময় সংসদ সদস্য ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরবর্তীতে তাঁর ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক টানা চারবার নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি আত্মগোপনে থাকায় নির্বাচনকে ঘিরে আসনটি রাজনৈতিক আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে