কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পূজামণ্ডপগুলোতে এ বছর সরকারি বরাদ্দের চালের পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে অর্ধেক টাকা। বাকি টাকা ভাগাভাগি করে নিয়েছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট—এমন অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় পূজা উদ্যোক্তারা।
১৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার প্রতিটি পূজামণ্ডপে ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয় প্রশাসন। বাজারমূল্য অনুযায়ী এর দাম দাঁড়ায় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু পূজামণ্ডপগুলোকে দেওয়া হয়েছে মাত্র ১৫ হাজার টাকা। ফলে ৪২টি পূজামণ্ডপ থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সিন্ডিকেট।
এ বছর কিশোরগঞ্জ জেলার ৩৯৪টি পূজামণ্ডপে ১৯৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। এর মধ্যে কটিয়াদী উপজেলার ৪২টি পূজামণ্ডপে বরাদ্দ ছিল সাড়ে ২১ মেট্রিক টন চাল।
স্থানীয় সূত্র বলছে, প্রশাসন বরাদ্দ দিলেও খাদ্য কর্মকর্তারা কালোবাজারিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে চাল বিতরণে বিলম্ব করেন। পরে তড়িঘড়ি করে মণ্ডপের সভাপতি ও সম্পাদকদের গুদামে ডেকে এনে ফাঁকা রেজিস্ট্রারে সাক্ষর করিয়ে প্রতি ডিওর বিপরীতে ধরিয়ে দেন ১৫ হাজার টাকা। এ কাজে খাদ্য কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করেছে পূজা উদযাপন কমিটির কয়েকজন প্রভাবশালী সদস্য।
বর্মণপাড়া পূজা মণ্ডপের সভাপতি শীতল চন্দ্র বর্মণ বলেন, “গুদামে গিয়ে কর্মকর্তা বলেন, সাক্ষর করে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে যান। বরাদ্দের চাল দেখতেও দেওয়া হয়নি।”
আনন্দময়ী যুব সংঘের সভাপতি উষা রঞ্জন সরকার জানান, পূজার ব্যস্ততার মধ্যে চাল বুঝে নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই টাকা নিতে হয়েছে।
ফুটন্ত কলি যুব সংঘের সভাপতি লিটন রবি দাস অভিযোগ করে বলেন, “পাশের জেলায় একই চাল ২২-২৫ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও আমরা ১৫ হাজারেই নিতে বাধ্য হয়েছি।”
এ বিষয়ে কটিয়াদী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, “প্রতিটি পূজামণ্ডপে খাবারের জন্য ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সভাপতি ও সম্পাদক ডিও সংগ্রহের পর বাকি কাজ খাদ্য বিভাগের।”
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কনক কান্তি দেবনাথ জানান, “চালের পরিবর্তে টাকা লেনদেনের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম বলেন, “চালের পরিবর্তে টাকা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

