ফরিদপুরে মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে এক বাবাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ আদেশ দেন।
রায় ঘোষণার সময় আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল ওয়াহাব মোল্লা (৪২) আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
বাদী (মেয়ের মা) এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০০৭ সালে তার সদরের কৃষ্ণনগর এলাকার আব্দুল ওয়াহাব মোল্লার সঙ্গে বিয়ে হয়। তাদের দুটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। ২০২০ সালে দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটে এবং বাদী অন্যত্র বিয়ে করেন। তবে দুই মেয়ে কখনো মায়ের কাছে, কখনো বাবার কাছে থাকত।
বাদীর বড় মেয়ে (বর্তমানে ১৫) বাবার বাড়িতে অবস্থানকালে বারবার ধর্ষণের শিকার হয়। প্রথমদিকে বিষয়টি জানালেও কেউ বিশ্বাস করেনি। ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা দুই বছর মেয়েটি নির্যাতনের শিকার হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঘটনাটি ঘটলে মেয়ে মাকে বিষয়টি জানায়। ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ মেলে।
পরে বাদী ২০২৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক সোহানা আক্তার ২০২৩ সালের ২৪ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম রাব্বানী ভূঁইয়া বলেন, আদালতে আসামির অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।অনাদায়ে আসামির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে প্রশাসনের মাধ্যমে ভুক্তভোগীকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “এটি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। বাবার কাছে যদি মেয়ের নিরাপত্তা না থাকে, তবে সমাজ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? এই রায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে