AB Bank
  • ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০ আশ্বিন ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী
ফরিদপুর-৪ আসন নিয়ে চতুর্থ দফার আন্দোলন

“জীবন দেবো তবুও মাটি দেব না” – ভাঙ্গায় মানববন্ধনে স্থানীয়রা


Ekushey Sangbad
ভাঙ্গা উপজেলা প্রতিনিধি, ফরিদপুর
০৩:১৭ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

“জীবন দেবো তবুও মাটি দেব না” – ভাঙ্গায় মানববন্ধনে স্থানীয়রা

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় ফরিদপুর-৪ আসন সংক্রান্ত বিতর্কের জেরে চতুর্থ দফার আন্দোলন চলছে। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কেএম কলেজ আঞ্চলিক সড়কে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, “জীবন দেবো, তবুও মাটি দেব না।” মানববন্ধনে শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ ও নারী—প্রতিটি বয়সের মানুষ অংশ নেন।

তাদের দাবি, “রক্ত লাগলে রক্ত দেবো, জীবন লাগলে জীবন দেবো, তবুও নগরকান্দা-সালথায় যাবো না।” মানববন্ধনে শিশু-কিশোর, বয়স্ক ব্যক্তি, নারী-পুরুষ—সব বয়সের দুই ইউনিয়নের মানুষ অংশ নেন। তারা ঘোষণা দেন, ভাঙ্গার সঙ্গে ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত জীবন বাজি রেখেই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ সুলতান মাতুব্বর বলেন, “মা-মাটি রক্ষার জন্য আমি আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। ভাত খেয়ে কুলি করি, ভাঙ্গা ছেড়ে আমরা ৩০ কিলোমিটার দূরে নগরকান্দা-সালথা উপজেলার সঙ্গে যুক্ত হবো না। এই সিদ্ধান্তকে ঘৃণাভরে প্রতিবাদ জানাই। প্রয়োজনে রাস্তায় শুয়ে শহীদ হতে রাজি আছি, তবুও ভাঙ্গার মধ্যে ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। কতজনের জীবন নেবে? হাজার হাজার জনগণ আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত।”

প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন এক গেজেটে ফরিদপুর-৪ আসনের অধীনে ভাঙ্গা উপজেলার বড় দুই ইউনিয়ন—আলগী ও হামিরদী—বিচ্ছিন্ন করে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করে। এর প্রতিবাদে ৫ সেপ্টেম্বর দুই ইউনিয়নবাসী ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে। ওই দিন দুপুর ২ টার দিকে ইউএনও মোঃ মিজানুর রহমানের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা তিন দিনের জন্য কর্মসূচি স্থগিত করেন।

৬ সেপ্টেম্বর দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউএনওর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। সমস্যা সমাধান না হওয়ায় তারা দ্বিতীয় ধাপে ৯-১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা-খুলনা ও ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে।

১৩ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে সকল রাজনৈতিক দল নিয়ে একটি সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয় এবং সেই মঞ্চ থেকে ১৪-১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তৃতীয় ধাপে সড়ক, মহাসড়ক ও রেলপথ ৩ দিনের অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই দিন রাতেই আলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

১৪ সেপ্টেম্বর যাত্রীদের ভোগান্তির কারণে আলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ম. ম. সিদ্দিক মিয়াকে প্রধান আসামি সহ ২৪০ জনকে দ্রুত বিচার আইনে গ্রেফতার দেখানো হয়। চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের ফলে দুই ইউনিয়নবাসী আরও বিক্ষুব্ধ হন।

একই দিনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘব করতে আন্দোলন দমন করার কঠোর ঘোষণা দেন। এর প্রেক্ষিতে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) তৃতীয় দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে আন্দোলনকারীদের অবরোধে বাধা প্রদান করে পুলিশ। তখন মুখোমুখি অবস্থান নেয় পুলিশ ও আন্দোলনকারীরা।

খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই ইউনিয়ন থেকে হাজার হাজার আন্দোলনকারী জড়ো হয়ে পুলিশকে ধাওয়া দেয়। পুলিশ জীবন বাঁচাতে মসজিদের ভেতর দিয়ে আশ্রয় নেয়। আন্দোলনকারীরা প্রথমে থানায় হামলা ও আগুন দিয়ে তাণ্ডব চালায় এবং সরকারি দপ্তরগুলোতে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটতরাজ ও অগ্নিকাণ্ড চালায়।

১৬ সেপ্টেম্বর রাতে নিক্সন চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে চল্লিশ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে পুলিশ মামলা দায়ের করেন। ১৮ সেপ্টেম্বর হাইওয়ে থানায় ২৯ জনকে আসামি করে এবং অজ্ঞাত আরো অনেককে অন্তর্ভুক্ত করে ৬৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির মামলা দায়ের করা হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর উপজেলা পরিষদের অধীনে অন্যান্য সরকারি দপ্তর নিয়ে নিক্সন চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো অনেককে অন্তর্ভুক্ত করে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির মামলা করা হয়। এ পর্যন্ত সহিংস ঘটনার চারটি মামলা হয়েছে।

আজকের আন্দোলন চতুর্থ দফার তৃতীয় দিন। তবে আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ থেকে সরে এসে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

 

একুশে সংবাদ/ফ.প্র/এ.জে

Link copied!