তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী আবেদন করেও তথ্য না পাওয়ায় কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) প্রদীপ কুমারের বিরুদ্ধে তথ্য কমিশনে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এক সংবাদকর্মী। এ ঘটনায় সাংবাদিক মহলে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে।
আবেদনকারী সংবাদকর্মী নুরবক্ত আলী জানান, তিনি গত ১৯ জুন ২০২৫ তারিখে উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ১৯ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের তালিকা (পত্রিকার নাম, প্রতিনিধির নাম ও প্রকাশের তারিখসহ) চেয়ে লিখিতভাবে আবেদন করেন। তবে নির্ধারিত ২০ কার্যদিবস পেরিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা কোনো তথ্য দেননি বা কোনো ব্যাখ্যা প্রদান করেননি।
এরপর তিনি ২৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে কুড়িগ্রাম জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী (এলজিইডি) বরাবর লিখিতভাবে আপিল করেন। কুড়িগ্রাম জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আপিলের কপি পাওয়ার পর উপজেলা প্রকৌশলীকে আবেদনকারীর চাওয়া তথ্য প্রদানের নির্দেশ দেন। তবে জেলা কর্মকর্তা তথ্য প্রদানের আদেশ দিলেও উপজেলা প্রকৌশলী কোনো তথ্য দেননি। পরে বাধ্য হয়ে আবেদনকারী তথ্য কমিশনে চলতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
সংবাদকর্মী নুরবক্ত আলী বলেন, “আমি আমার আইনসম্মত অধিকার ব্যবহার করে তথ্য জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দপ্তর বারবার অবহেলা করেছে। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক।”
এ বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিক মমিনুল ইসলাম বাবু বলেন, “তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী দেশের প্রতিটি নাগরিকের তথ্য জানার অধিকার রয়েছে। কিন্তু অনেক সরকারি কর্মকর্তা এখনো এই আইন মানতে চান না, কারণ এতে তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে। এটা গণতন্ত্র ও সুশাসনের প্রতি অবজ্ঞা।”
আপিল করার বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা (এলজিইডি’র) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউনুস হোসেন বিশ্বাস বলেন, “আপিলের কপি পাওয়ার পর আইন অনুযায়ী আবেদনকারীর চাওয়া তথ্য প্রদান করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেওয়া হয়।”
তথ্য কমিশনের তথ্য গবেষক রাবেয়া হেনার কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অভিযোগটি জমা হয়েছে। পরে এটি তথ্য কমিশনার মহোদয়ের নিকট উপস্থাপন করা হবে।”
উল্লেখ্য, তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর আওতায় সরকারি দপ্তরগুলোর তথ্য নাগরিকদের কাছে উন্মুক্ত রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইন অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও বিধান রয়েছে।
একুশে সংবাদ/কু.প্র/এ.জে