AB Bank
  • ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮ আশ্বিন ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ফরিদপুরের বাউশখালী জমিদার বাড়ি আজও ধরে রেখেছে শতবর্ষের ঐতিহ্য


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি, ফরিদপুর
০৭:৫০ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফরিদপুরের বাউশখালী জমিদার বাড়ি আজও ধরে রেখেছে শতবর্ষের ঐতিহ্য

ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলার অন্তর্গত বল্লভদি ইউনিয়নের বাউশখালী গ্রামে আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে দুই শত বছরের পুরনো বাউশখালী জমিদার বাড়ি। সালথা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি এক সময় ছিল জমজমাট জনবসতি, আর এখন নিস্তব্ধ এক স্মৃতিস্তম্ভ।

ঐতিহাসিক পটভূমি অনুযায়ী, ১৭৬০ সাল থেকে এই জমিদার বাড়িতে বসবাস শুরু করেন সিংহ পরিবার। যদিও শুরুর দিকের জমিদারদের বিষয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় না, তবে ১৮৫৯ সালে জন্ম নেওয়া যতীন্দ্রনাথ সিংহ রায় বাহাদুর ছিলেন এই পরিবারের অন্যতম উজ্জ্বল নাম। তিনি বঙ্গীয় সিভিল সার্ভিসে দীর্ঘ ৩০ বছর দায়িত্ব পালনের পর সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন। ফরিদপুরের একাংশে তিনি জমিদারিত্ব করতেন। তাঁর স্ত্রী সরোজিনী সিংহ ও তিনি আমৃত্যু বাউশখালী জমিদার বাড়িতে বসবাস করতেন। তাঁদের মৃত্যুর পর কোথায় সমাধিস্থ করা হয়েছে তা আজও অনির্দিষ্ট।

পরবর্তী প্রজন্মের অবদান হিসেবে, যতীন্দ্রনাথ সিংহের একমাত্র পুত্র সুরেন্দ্রনাথ সিংহ কলকাতায় বসবাস শুরু করলেও, তাঁর পুত্র সত্যজিৎ সিংহ (বৈদ্যনাথ বাবু) ১৯৫২ সালে স্ত্রী রেখা রাণী সিংহকে নিয়ে ফিরে আসেন বাংলাদেশে এবং বাউশখালী জমিদার বাড়িতে পুনরায় বসবাস শুরু করেন।

সত্যজিৎ সিংহ ছিলেন সমাজসেবক। হাট-বাজার, শিক্ষা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে তিনি জমি দান করে এলাকায় অবদান রাখেন। তিনি ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর এবং তাঁর স্ত্রী রেখা রাণী সিংহ ২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। তাঁরা উভয়েই সমাহিত হন সিংহবাড়ি সংলগ্ন দুর্গা মন্দিরের পাশে।

সিংহবংশের কেউ বর্তমানে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে নেই। রেখে যাওয়া স্মৃতিচিহ্ন, ঠাকুর দালান ও জমিদার বাড়ির দেখাশোনা এবং সংরক্ষণের জন্য রেখা রাণী সিংহ তাঁদের সম্পত্তি রাধাগোবিন্দের নামে দান করেন।

বর্তমান অবস্থায় জমিদার বাড়ির প্রাসাদতুল্য নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে চুন-সুরকি, ইট, কাঠ ও লোহার সমন্বয়। রয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন মন্দির এবং তিনতলা বিশিষ্ট দুটি প্রাচীন ভবন। এক সময় যে বাড়িতে ছিল সোনা-রুপার অলংকার, পাথরের মূর্তি, তামা-কাসার আসবাব—এখন সেখানে শুধুই নীরবতা ও ভাঙনের শব্দ শোনা যায়।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহীন ‍‍`সময়ের কন্ঠস্বর‍‍`কে জানান, “জমিদার বাড়িটি এখন পরিত্যক্ত এবং শুধুই একটি স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে টিকে আছে। এটি দ্রুত সংস্কার করে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা উচিত।”

সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা বাউশখালী জমিদার বাড়ি কেবল একটি পারিবারিক স্থাপনা নয়, এটি এক যুগের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অনন্য দলিল। এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটিকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ না করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস থেকে বঞ্চিত হবে। সরকারি উদ্যোগ, গবেষকদের আগ্রহ এবং স্থানীয় জনগণের সচেতনতা এই নিদর্শন সংরক্ষণের জন্য অত্যন্ত জরুরি।


একুশে সংবাদ/ফ.প্র/এ.জে

Link copied!