বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে শুরু হওয়া অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৭০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মবিরতিতে রয়েছেন। জেলার ১৭টি উপকেন্দ্র থেকে বর্তমানে সাড়ে পাঁচ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ পাচ্ছেন। তবে এই কর্মবিরতি চলতে থাকলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লাখো গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়তে পারেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত ৩১ আগস্ট থেকে চার দফা দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন তারা। তবে সম্প্রতি সাতজন কর্মকর্তাকে সাসপেন্ড করার পর থেকে কর্মবিরতি শুরু হয়।
কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে ৪০ লাখ প্রিপেইড মিটার ক্রয়, নিম্নমানের ট্রান্সফরমার, পোল ও অন্যান্য সরঞ্জাম ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এসবের কারণে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে এবং সাধারণ গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।
তাদের দাবি, সারাদেশে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা আরইবির জন্য এক ও অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন করতে হবে, চুক্তিভিত্তিক কর্মরতদের চাকরি স্থায়ী করতে হবে এবং দুর্নীতির তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তি দিতে হবে। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, ৩৬ বছর ধরে চুক্তিভিত্তিক পদে কাজ করেও তারা নিয়মিত হতে পারেননি, বরং আন্দোলনে নামলেই সহকর্মীদের বরখাস্ত করা হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম মো. সাইদুর রহমান অনুপস্থিত থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডিজিএম (কারিগরি) মো. রুবলে হোসাইন ও এজিএম (প্রশাসন) মো. ইসমাইল হোসেন মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে সমিতির নিম্নস্তরের কর্মচারীরা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা ৭ সেপ্টেম্বর থেকে গণছুটিতে রয়েছেন।
এদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে মতভেদও দেখা দিয়েছে। একাংশ কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করতে আগ্রহী, তবে অপর অংশ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
একুশে সংবাদ/ব্রা.প্র/এ.জে