লাল-সবুজ রঙের মাঝারি আকারের তীব্র ঝাল মরিচ—নাগা মরিচ। ঝালপ্রিয় মানুষের কাছে যার আলাদা কদর রয়েছে। মৌলভীবাজারের পাহাড়ি এলাকায় এই মরিচ এখন বাণিজ্যিকভাবে আবাদ হচ্ছে। লেবু-আনারসের বাগানের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলার শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার মাটি নাগা মরিচ চাষের জন্য উপযোগী। খরচ কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন এ আবাদে ঝুঁকছেন। স্থানীয়ভাবে চাহিদা থাকলেও এর বড় বাজার ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্য। বিদেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি ও সিলেটিদের মধ্যে নাগা মরিচের আচার ব্যাপক জনপ্রিয়।
শ্রীমঙ্গলের কৃষক কাজী সামছুল হক জানান, তিনি ১ হাজার ২০০ শতক জমিতে নাগা মরিচ আবাদ করেছেন। প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ করে ২০ থেকে ২২ লাখ টাকার মরিচ বিক্রির আশা করছেন। মোহাজেরাবাদের কৃষক ইউনুছ মিয়া গত বছর ৭২ হাজার টাকা খরচ করে ১ হাজার চারা রোপণ করেছিলেন, যা থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করেন। অন্য কৃষকরাও একইভাবে লাভবান হয়েছেন।
শ্রীমঙ্গলের আড়তদাররা জানান, মৌসুমে প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ টাকার নাগা মরিচ বিক্রি হয়। বিদেশি বাজারে চাহিদা থাকায় স্থানীয় আড়ত থেকে পাইকাররা মরিচ কিনে নিয়ে রপ্তানি করেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, “নাগা মরিচ মূলত লেবু-আনারসের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করা হয়। জমির অবশিষ্ট জায়গায় চাষ করলেও এটির উৎপাদন ও বাজারমূল্য দুই-ই বেশি। বর্তমানে উপজেলায় প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে নাগা মরিচ আবাদ হচ্ছে।”
২০০৭ সালে গিনেস বুকে পৃথিবীর সবচেয়ে ঝাল মরিচ হিসেবে স্বীকৃতি পায় নাগা মরিচ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Capsicum chinense এবং ইংরেজি নাম ‘কোবরা চিলি’। বর্তমানে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে নাগা মরিচ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে