বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে, অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে এবং সাধারণ মানুষ মৌলিক অধিকার হারিয়েছে। তিনি বলেন, যে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে পড়েছে, সেগুলো পুনর্গঠনের মাধ্যমে শক্তিশালী করাই হবে বিএনপির লক্ষ্য।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “২৪ জুলাই ঢাকার রাজপথে তরুণ, যুবক, নারী-শিশুরা নিজেদের অধিকার ফেরাতে জীবন দিয়েছে। ঠাকুরগাঁওতেও গত ১৫ বছরে বিএনপির ১২ নেতা-কর্মী শহীদ হয়েছেন। কেবল জুলাই মাসেই প্রাণ দিয়েছেন চারজন।”
তিনি অভিযোগ করেন, এ জেলায় আওয়ামী লীগ ৭৫টি মামলা দিয়ে প্রায় সাড়ে সাত হাজার নেতাকর্মীকে হয়রানি করেছে। অনেককে পালিয়ে থাকতে হয়েছে, কেউ ক্ষেতখামারে লুকিয়ে থেকেছেন, আবার কেউ কারাভোগ করেছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আজকের সম্মেলন আমাদের জন্য আনন্দের, কারণ আমরা খোলামেলা পরিবেশে দলীয় কার্যক্রম চালাতে পারছি। তবে একই সঙ্গে দুঃখেরও, কারণ আমরা অনেক প্রিয় সহযোদ্ধাকে হারিয়েছি।”
তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে বলেন, “জিয়া এমন একটি দল গড়ে দিয়েছিলেন, যারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে ও প্রাণ দিয়েছে।” এছাড়া খালেদা জিয়ার ভূমিকার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “তিনি দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন এবং টানা ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধেও মাথা নত না করে লড়াই চালিয়ে গেছেন।”
তারেক রহমানকে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বদাতা হিসেবে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ এখন তার দিকেই তাকিয়ে আছে, এবং তার নেতৃত্বেই আগামী দিনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছে, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা দিয়েছে এবং ভিশন-২০৩০-এর মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা ঘোষণা করেছে। বর্তমানে ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে অর্থনীতি, রাজনৈতিক কাঠামো ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনে দল কাজ করছে।
সম্মেলনের উদ্বোধনকালে মির্জা ফখরুল জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এবং রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু উপস্থিত ছিলেন। প্রায় সাত বছর আট মাস পর আয়োজিত এ সম্মেলনে সকাল থেকেই জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। জেলার পাঁচ উপজেলা ও তিন পৌরসভার মোট ৮০৮ জন কাউন্সিলর ভোট দিয়ে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।
একুশে সংবাদ/কা.বে/এ.জে