নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, শাওন নিহত হলেও সেদিন নারায়ণগঞ্জ তার বীরত্ব দেখিয়েছে। শাওনের রক্তের প্রতিবাদে সেদিন থেকেই ফ্যাসিবাদের পতন শুরু হয়।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফতুল্লা এনায়েতনগর ইউনিয়নের নবীনগর কবরস্থানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রার সময় পুলিশের গুলিতে নিহত যুবদল কর্মী শাওন প্রধানের কবর জিয়ারত শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, ২০২৪ সালের আন্দোলনে যেমন আবু সাঈদ হাতে ছোট একটি লাঠি নিয়ে পুলিশের সামনে দাঁড়িয়েছিল, তেমনি শাওনের হাতেও ছিল ছোট একটি পাইপ। এটি কোনো মরণাস্ত্র ছিল না, বরং হামলার প্রতিবাদে সে পাইপ হাতে দাঁড়িয়েছিল। শাওন নিহত হলেও সেদিন নারায়ণগঞ্জ তার বীরত্ব প্রদর্শন করেছে।
তিনি আরও বলেন, “সেদিন তিন ঘণ্টা খালি হাতে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করেছি। শেষ পর্যন্ত পুলিশ পালাতে বাধ্য হয়, এবং এখান থেকেই সারাদেশে প্রতিরোধের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আর পুলিশ কখনও আমাদের উপর হামলা করতে পারেনি।”
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মন্তব্য করেন, ২০২২ সালে শাওনের রক্তের মধ্য দিয়ে যে ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল, তার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা পালাতে বাধ্য হয়েছেন। যারা পালাতে পারেনি, তারা লুকিয়ে আছে বা জেলে রয়েছে। শাওন হত্যার বিচার করেই দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে হবে।
তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপার রাসেলসহ নির্দেশদাতাদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ যেমন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে, তেমনি শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের পতন না হওয়া পর্যন্ত এই প্রতিরোধ চলবে।
এ সময় শাওনকে স্মরণীয় রাখতে ২ নম্বর রেলগেটে ‘শাওন স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণ, কবর সংরক্ষণ ও নামফলক স্থাপনের আশ্বাস দেন অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। পরে নিহত শাওন প্রধানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম টিটু, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি এবং স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মিছিলে পুলিশের গুলিতে যুবদল কর্মী শাওন প্রধান নিহত হন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও সাবেক পাঁচ সংসদ সদস্যসহ ৫২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/না.প্র/এ.জে