কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেছেন, বর্তমানে দেশে কোনো সার সংকট নেই। এমনকি আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত যে পরিমাণ সারের চাহিদা রয়েছে, তা মজুত রয়েছে। কিছু কৃত্রিম সমস্যার কারণে সারের সংকট বলে প্রচার করা হচ্ছে। কিছু অসাধু সুবিধাভোগী মানুষের কর্মকাণ্ডের কারণে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তবে অসচেতনতা ও অজ্ঞতার কারণে সারের অতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে। তা রোধে সরকার কাজ করছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের যে বাজেট রয়েছে, তার ৭০ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে সারের ভর্তুকিতে। এতে বছরে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)-এর নদী থেকে সেচের পানি উত্তোলনের প্রকল্প পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসময় তিনি আরও বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁয়ে ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। তাই বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে এই অঞ্চলে কম পানি প্রয়োজন এমন ফসল চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এছাড়াও বৃষ্টির পানি আটকে রেখে ফসলে ব্যবহারের পাশাপাশি ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন করে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্পের সম্ভাবনা যাচাই চলছে।
কৃষি সচিব বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে বর্তমানে ব্যাপক ফসল উৎপাদন হচ্ছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহারের কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। দুটি দিকই বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। একদিকে যেমন ফসল উৎপাদন স্বাভাবিক থাকে, তেমনি অন্যদিকে যাতে ভূ-গর্ভস্থ পানি কম ব্যবহার হয় সেদিকে সরকার সজাগ রয়েছে। প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষিবান্ধব দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এর আগে তিনি মহানন্দা ও পূর্ণভবা নদীর মোহনা পরিদর্শনকালে স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি নদীর গতিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে প্রকল্প পরিকল্পনার কথা জানান। পরে কৃষি সচিব গোমস্তাপুর উপজেলা বিএমডিএ`র নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন। বিকেলে উপজেলার মচকৈল এলাকায় কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মো. তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শামসুল হোদা, প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. মো. আবুল কাসেম, প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এটিএম মাহফুজুর রহমান, মো. নাজিরুল ইসলাম, শিবির আহমেদ, সচিব নীলুফা সরকার, নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা খানমসহ বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
একুশে সংবাদ/চাঁ.প্র/এ.জে