পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) ফ্যাসিবাদীদের বিচার, দুর্নীতি ও অনিয়ম তদন্তের দাবিতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে জিয়া পরিষদ কর্মকর্তা ইউনিট। তাদের ৫ দফা দাবির বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ২ কার্যদিবসের আল্টিমেটাম দিয়েছে সংগঠনটি।
গত ২৭ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া পরিষদ কর্মকর্তা ইউনিটের এক জরুরি সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় অভিযোগ করা হয়, গত ১১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৫ দফা দাবির স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর ১০ কার্যদিবস পেরিয়ে গেলেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।
সভা শেষে জিয়া পরিষদের নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং হুঁশিয়ারি দেন— আগামী ২ কার্যদিবসের মধ্যে অগ্রগতি না হলে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিশন থেকে একযোগে পদত্যাগ করবেন তারা। পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করার ঘোষণা দেন।
জিয়া পরিষদের উত্থাপিত ৫ দফা দাবি
১. ফ্যাসিবাদে জড়িত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের দ্রুত অপসারণ ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
২. খণ্ডকালীন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের স্থায়ী নিয়োগ।
৩. সিনিয়র পদগুলোতে সিনিয়র কর্মকর্তাদের দায়িত্ব প্রদান।
৪. অর্থ ও হিসাব শাখার ২ কোটি ৯ লাখ ১৪ হাজার ৯৯ টাকা আত্মসাতের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার।
৫. ১০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আর্থিক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তদন্ত।
দুদক ইতোমধ্যে অর্থ ও হিসাব শাখার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছে। তবে বাকি দাবিগুলোতে প্রশাসনের নীরব ভূমিকা ক্ষোভ বাড়াচ্ছে বলে জানান জিয়া পরিষদের নেতারা।
পবিপ্রবি জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. হাচিব মোহাম্মদ তুষার বলেন, “ফ্যাসিবাদীদের শাস্তি এবং দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু প্রশাসনিক পরিবেশ ফিরবে না। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিক।”
সংগঠনের সভাপতি মো. আবুবকর সিদ্দিক বলেন, “দাবি পূরণে প্রশাসনের গড়িমসি বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে নিয়োগ, পদোন্নতি এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে নানা অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে প্রশাসনের নীরবতায় অসন্তোষ দিন দিন বাড়ছে।
জিয়া পরিষদের সদস্যরা আশা প্রকাশ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ফ্যাসিবাদ, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেবে।
একুশে সংবাদ/প.প্র/এ.জে