লক্ষ্মীপুরে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে বীমার মেয়াদ শেষ হলেও গ্রাহকদের দাবি পরিশোধে গড়িমসি, টালবাহানা ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) হটলাইনে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।
দীর্ঘদিন ধরে দাবিকৃত অর্থ ফেরত না পেয়ে এক ভুক্তভোগী গ্রাহক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার গর্ন্ধব্যপুর গ্রামের সামছুল ইসলামের পুত্র রবিউল ইসলাম লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ডিএমডিসহ মোট ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান মো. নোমান মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানা ওসিকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও মো. শাহজাহান নামের আরেক গ্রাহক আসামিদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগে মামলা করেছিলেন।
মামলার বাদী রবিউল ইসলাম জানান, “আমিসহ আমার পরিবারের পাঁচ সদস্যের নামে মোট ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা জমা হয়েছে। প্রায় তিন বছর হয়ে গেলেও এখনো আমাদের কোনো টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। লক্ষ্মীপুর ও মান্দারী এলাকার অফিসগুলো বন্ধ রয়েছে। কর্মকর্তাদের মোবাইলও বন্ধ। একাধিকবার সময় নিয়ে শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু প্রতারণাই করেছে। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করেছি। আশা করি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার পাব।”
রবিউলের পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী মহসিন কবির মুরাদ ও রেজাউল ইসলাম খান বলেন, “পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি বহু গ্রাহকের মেয়াদোত্তীর্ণ দাবির অর্থ ফেরত দেয়নি। আমরা একাধিকবার উকিল নোটিশ পাঠিয়েছি, কিন্তু কোনো কার্যকর সাড়া মেলেনি। রবিউল ইসলামের মতো আরও অনেক ভুক্তভোগী আছেন।”
এদিকে, লক্ষ্মীপুর শহরের একতা সুপার মার্কেটের চতুর্থ তলায় কোম্পানির কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দরজায় তালা ঝুলছে। বাইরে কোম্পানির কোনো সাইনবোর্ডও নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বীমা প্রতিষ্ঠানের এক ব্যবস্থাপক জানান, “পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অফিস আগে বাগবাড়ি এলাকায় ছিল। সেখান থেকে একতা সুপার মার্কেটে এলেও কখনো তাদের অফিস খোলা দেখা যায়নি।”
পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুর মোহাম্মদ ভূঁইয়ার সঙ্গে অফিসিয়াল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
একুশে সংবাদ/ল.প্র/এ.জে