জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দেশীয় ধারালো অস্ত্র ‘ফালা’র আঘাতে আল-আমিন (৩৫) নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের ভবানীপুর পূর্বপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভবানীপুর গ্রামের মৃত ইছাক আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন এবং একই গ্রামের জিয়াউল হকের ছেলে আল-আমিন মিয়ার মধ্যে ১৬ শতাংশ ফসলি জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। জমিটি নিয়ে পূর্বে উভয়পক্ষ আদালতের আশ্রয় নেন এবং বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে।
বিতর্কিত ওই জমি দখলের ভিত্তিতে জাহাঙ্গীর হোসেন ৮০ হাজার টাকায় স্থানীয় কৃষক আজিজল ইসলামের কাছে ‘কন্ডিশনে’ লিজ দেন। এরপর আজিজল সেখানে পাট চাষ করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে আজিজল ও তার শ্রমিকরা জমির পাট কাটতে গেলে আল-আমিন ও তার পরিবারের সদস্যরা বাধা দেন। এ সময় জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে ফারুক মিয়া, দেলোয়ার, ফিরোজ, সুমন, মেহেদীসহ ২০–২৫ জনের একটি দল আল-আমিনদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
হামলার একপর্যায়ে ফারুক মিয়া দেশীয় অস্ত্র ‘ফালা’ দিয়ে আল-আমিনের পেটে আঘাত করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন।
আহত আল-আমিন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, “ঐ জমির প্রকৃত মালিক আমরা। কোর্টে তারা মুচলেকা দিয়ে জানিয়েছে, জমিটি তাদের নয়। এরপরও জোর করে দখলে আছে। পাট কাটতে বাধা দিলে তারা আমার ওপর হামলা চালায় এবং ফালা দিয়ে পেটে আঘাত করে।”
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মন্টু মিয়া, আব্দুল ছালামসহ অনেকে বলেন, “উক্ত জমি ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি, যা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে এবং কোর্টে মামলাও আছে।”
অন্যদিকে অভিযুক্তদের একজন, জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান বলেন, “জমিটি আমাদের দাদী হালিমা বেগমের ওয়ারিশকৃত সম্পত্তি। তাই আমরা দখলে রেখেছি। কাগজপত্র আমাদের আছে। তবে আমরা কোনো মারামারি করিনি, ওরা নিজেরা মারামারি করে আহত হয়েছেন।”
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাসেদুল হাসান রাশেদ বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
একুশে সংবাদ/জা.প্র/এ.জে