গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গোবিপ্রবি) শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক আয়োজনে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতাসহ অন্তত ১৫ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে শেখ রাসেল হলের একাধিক কক্ষ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শ্রেণিকক্ষ।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাত ১১:৩০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৩টা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইইই (সি), আর্কিটেকচার, ম্যানেজমেন্ট ও ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে পুরো ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, রাত ১১:৩০টার দিকে ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক আয়োজন চলাকালে বিজিই বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ অয়ন তার স্ত্রীকে বসার চেয়ার এগিয়ে দিতে গেলে, ইইই বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতি ও সংঘর্ষে রূপ নেয়।
সংঘর্ষ একাডেমিক ভবন থেকে ছড়িয়ে পড়ে আবাসিক হলগুলোতে। ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী বাদশার মাথা ফেটে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপরদিকে ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের অভিযোগ, বাদশা তাকে কামড় দেন। পরবর্তীতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বিজয় দিবস ও শেখ রাসেল হলে। শফিক গ্রুপ শেখ রাসেল হলে হামলা চালালে বেশকিছু কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থীরা ছাত্রদল নেতা সাকিব ও শফিকের কক্ষ ভাঙচুর করে এবং জিনিসপত্র বাইরে ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা ড. আরিফুজ্জামান রাজিব, সহকারী প্রক্টর সাইফুল ইসলাম, ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী ওবায়দুলসহ কয়েকজন আহত হন। সংঘর্ষে বেশ কিছু শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ছাত্রদলের নেতা শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, শেখ রাসেল হলে তারা কোনো হামলায় অংশ নেয়নি। বরং তাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালানো হয়েছে এবং তাদের কক্ষে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তিনি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান। অপরদিকে শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. সবুজ হোসেন বলেন, “রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের কিছু সন্ত্রাসী হলের ভিতর ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছে। আমরা দ্রুত তাদের হল থেকে বহিষ্কার চাই।”
ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী মাশরুল বলেন, “অয়ন তার স্ত্রীকে বসাতে চাইলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের কয়েকজন হামলা করে। এমনকি নারী শিক্ষার্থীদের উপরেও তারা হামলা চালায়। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকেও মারধর করে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজিব বলেন, “ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দোষীদের দ্রুত সনাক্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে