গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশসহ আরও অনেকে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন- সিকদারপাড়ার সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা, কোটালীপাড়ার কমরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী টুঙ্গিপাড়ার সোহেল রানা মোল্লা এবং ইমন।
গোপালগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা কর্মসূচি চলাকালে শহরের পৌরপার্ক এলাকায় তাদের সমাবেশ মঞ্চে আকস্মিক হামলা চালায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলার সময় তারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে মঞ্চে উঠে ভাঙচুর চালায়। সাউন্ড সিস্টেম, চেয়ার, মাইকসহ মঞ্চের অন্যান্য সরঞ্জাম তারা গুড়িয়ে দেয় এবং এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।
এ ঘটনায় দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এনসিপির গাড়িবহরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে, ভাঙচুর চালায়। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে সংঘর্ষ আরও ছড়িয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ফাঁকা গুলি, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। তবে সংঘর্ষ থামেনি। গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।
এনসিপি নেতারা জানায়, হামলার আশঙ্কায় তাদের গাড়িবহরের একটি অংশ মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হতে পারেনি। বাকিরা নিরাপত্তা চেয়ে আশ্রয় নিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে।
‘রাষ্ট্র সংস্কার’, ‘জুলাই গণহত্যার বিচার’ ও ‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার দাবিতে এনসিপি ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করে আসছে। তারই অংশ হিসেবে আজকের গোপালগঞ্জের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর গোটা শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা যৌথভাবে কাজ করছে।
শেষ খবর অনুযায়ী, পরিস্থিতি থমথমে, শহরজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/চ.ট/এ.জে