কেশবপুর পৌর এলাকা ও সদর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হরিহর নদীতে কচুরিপনার দখলের ফলে পানি নিস্কাশন কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই উপজেলা শহর ও সংলগ্ন গ্রামগুলোতে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত ১০ দিনের টানা বৃষ্টিপাতে ইতোমধ্যে আলতাপোল, সুজাপুর, বালিয়াডাঙ্গা, ব্রক্ষকাটি, সাহাপাড়া, ভবানীপুর, হাবাসপুর ও মধ্যকুল গ্রামে নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। অনেক বাড়ির উঠান পানিতে তলিয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, কপোতাক্ষ নদ থেকে উৎসারিত হরিহর নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৪১ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩৫ কিলোমিটার নদী খনন জরুরি বলে তারা মত দিয়েছে। পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজন হবে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।
বর্ষার ভরা মৌসুমে তাৎক্ষণিক পানি নিষ্কাশনের লক্ষ্যে ভাসমান ড্রেজার দিয়ে জরুরি খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি সুমন শিকদার জানিয়েছেন, এক কোটি টাকা ব্যয়ে আপাতত তিন নদীর মোহনা থেকে বালিয়াডাঙ্গা দেবালয় মন্দির পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার হরিহর নদী খনন করা হবে। এ প্রকল্পে আপার ভদ্রা নদীসহ পানি নিষ্কাশনে সমস্যাকবলিত অন্য এলাকাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এদিকে প্রতি বছর আপার ভদ্রা নদীতে কাশিমপুর এলাকায় একটি ক্রসবাঁধ নির্মাণ করা হয় পলি জমা নিয়ন্ত্রণের জন্য। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, এবারও জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে বাঁধটি দেওয়া হয়েছিল এবং বরাবরের মতো জুলাইতে তা কেটে দেওয়া হয়েছে। ১০ জুলাই সকালের দিকে বাঁধটি কেটে দেওয়ার পর থেকে পানি দ্রুত নামতে শুরু করেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসনে মনিরামপুর এলাকা থেকে কচুরিপনার শিকড় কেটে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে ভাসমান খনন কাজ শুরু হবে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিবছরই নদীর তলদেশে পলি জমে নদী সংকুচিত হচ্ছে এবং কচুরিপনায় নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে দ্রুত ও দীর্ঘমেয়াদি খনন ছাড়া এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
একুশে সংবাদ/য.প্র/এ.জে