চলতি বছরের জুন মাসে দেশের সড়কে ৬৮৯টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৬৯৬ জনের এবং আহত হয়েছেন ১ হাজার ৮৬৭ জন। অর্থাৎ, গড়ে প্রতিদিন ২৩ জনের বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।
বুধবার (২ জুলাই) রোড সেফটি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটি ৯টি জাতীয় পত্রিকা, ৭টি অনলাইন সংবাদমাধ্যম, বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এবং নিজস্ব তথ্যসূত্র বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, মে মাসের তুলনায় জুনে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ২২.৫৫ শতাংশ। পাশাপাশি এ সময়ে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার ৪৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকায়।
নিহতদের মধ্যে নারী রয়েছেন ১০৪ জন (১৫.০৯%) এবং শিশু ১০৯ জন (১৫.৮২%)। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়—মোট ২২৮ জন (৩২.৭৫%)। এছাড়া ১২০ জন পথচারী (১৭.২৪%) এবং ১০৬ জন চালক ও সহকারী (১৫.২২%) প্রাণ হারিয়েছেন।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩০৬টি দুর্ঘটনা (৪৪.৪১%) ঘটেছে যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১৬৭টি (২৪.২৩%) মুখোমুখি সংঘর্ষ এবং ১২৪টি (১৮%) পথচারীকে চাপা দেওয়ার ঘটনা।
সময়ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনার হার সবচেয়ে বেশি সকালে (২৬.২৬%) এবং বিকেলে (২০.৭৫%)।
সড়কভিত্তিক হিসেবে জাতীয় মহাসড়কে ঘটেছে ৪২.৯৬ শতাংশ দুর্ঘটনা এবং আঞ্চলিক সড়কে ৩৫.২৬ শতাংশ। বিভাগীয়ভাবে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে—মোট ২০২টি, যাতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৮৭ জন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন মনে করে, সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির মূল কারণ বেপরোয়া গতি, চালকদের প্রশিক্ষণ ও মানসিক প্রস্তুতির ঘাটতি এবং পথচারীদের অসচেতনতা।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, শুধু আইন প্রয়োগ যথেষ্ট নয়—ট্রাফিক ব্যবস্থায় কাঠামোগত সংস্কার, গণমাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচার এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমেই দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব।
একুশে সংবাদ/চ.ট/এ.জে