সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার বংশিকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের উমান প্রবাসী মৃত সুরুজ আলীর স্ত্রী বিধবা শমলা আক্তার (৪৮) ও একই গ্রামের যুবক মো. সোহেল হোসেন (২৫) — এদের মধ্যে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে পরকীয়া সম্পর্ক চলছিল। অবশেষে সেই প্রেমিকার দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় প্রেমিক সোহেলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, গত ৯ জুন (মঙ্গলবার) দিবাগত রাতে শমলা আক্তার থানায় অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন ভোর রাতে সোহেল হোসেন তার ঘরে প্রবেশ করে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় ধর্ষিতার ১৮ বছর বয়সী ছেলে পাশের ঘরে ঘুমিয়ে ছিল।
ঘটনার অদ্ভুত দিক হলো—ধর্ষণের অভিযোগ সত্ত্বেও অভিযুক্ত সোহেল ঘটনাস্থলেই সকাল পর্যন্ত শুয়ে ছিল। সকালবেলা শমলার সহোদরা বোন ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে তাকে আটক করে। পরে স্থানীয় লোকজন জড়ো হলে এলাকার মাতব্বরগণ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং মীমাংসার চেষ্টা করেন। এ সুযোগে জানালার গ্রিল ভেঙে পালিয়ে যায় সোহেল।
এরপর মীমাংসা না হওয়ায় গত ১২ জুন (রবিবার) ধর্ষিতা শমলা আক্তার বাদী হয়ে মধ্যনগর থানায় সোহেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
আরও জানা যায়, শমলার স্বামী সুরুজ আলী উমানে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে তার স্ত্রী শমলা একই গ্রামের মো. আলী হোসেনের ছেলে সোহেলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। প্রায় আড়াই বছর আগে সুরুজ আলী দেশে ফিরে এ সম্পর্কের বিষয়ে জানতে পারেন এবং স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত তিনি বিষপানে আত্মহত্যা করেন। ওই আত্মহত্যা নিয়েও মামলা হয়েছিল আদালতে। তারপরও শমলা ও সোহেলের সম্পর্ক চলতে থাকে, যা বন্ধ করতে পারেনি সমাজ ও মামলা।
গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে অভিযোগকারী শমলা আক্তার জানান, সোহেলকে বিয়ে করার ইচ্ছে থাকলেও তার পালিয়ে যাওয়ার কারণে তিনি ধর্ষণ মামলা করেছেন। পলাতক থাকার সময় স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টাও চলছিল, অবশেষে দুই পক্ষ আপোষে সম্মত হয়।
অবশেষে শনিবার (২৮ জুন) রাত সাড়ে ৩টার দিকে মধ্যনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিবুর রহমানের দিকনির্দেশনায় এসআই বিকাশ সরকার ও সঙ্গীয় ফোর্স তাহিরপুর উপজেলার কলাগাঁও এলাকা থেকে সোহেলকে গ্রেফতার করেন। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
একুশে সংবাদ/সু.প্র/এ.জে