বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ-দেশ ও বিশ্বের বহুল আলোচিত ও প্রমাণীত একটি হাস্যকর অভিযোগ। জ্ঞানের পরিসীমা ক্ষীণ হওয়ার কারণে আমরা রহস্যজনকভাবে এখনও এমন অভিযোগ নিয়ে হট্টগোল করছি।
‘বিয়ের প্রলোভনে প্রলুদ্ধ করে নারীকে ধর্ষণ’ করা হয়েছে- এরকম অভিযোগ এনে বাংলাদেশে অহরহ মামলা হয়েছে এবং হচ্ছে। এ ধরণের অভিযোগ সৃজনের বিষয়টি এখন দেশে নতুন কোনো ঘটনাই না। সম্পৃক্ত নারীর কাঙ্ক্ষিত চাওয়া এবং পাওয়ার হিসাবে অসামঞ্জস্য দেখা দিলেই সংকট সৃষ্টি ও তা ঘনীভূত হয়।
কথা হচ্ছে, যেহেতু এরকম অভিযোগ নতুন নয় ও অগুণিত এবং সংবাদপত্র ও বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে বিষয়টি ফলাও করে প্রচার করা হয়; সেহেতু অবুঝ শিশু, পাগল ছাড়া বিয়ের প্রলোভনে নতুন করে কোনো নারী ‘প্রলুদ্ধ’ হওয়ার বিষয়টি কতটা বাস্তবসম্মত তা-ই বিবেচ্য।
বিষয়টি যে পুলিশ, সমাজ-রাষ্ট্র সর্বোপরি বিজ্ঞ আদালত বুঝে না তা বলা সঙ্গত হবে না। তবুও মামলা হচ্ছে! মামলায় অভিযুক্ত পুরুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। আমাদের আইন অন্ধ বলেই এমনটি হচ্ছে।
অবশ্য প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতসহ উন্নত রাষ্ট্রগুলো ‘বিয়ের প্রলোভনে প্রলুদ্ধ করে নারীকে ধর্ষণ’-এ অভিযোগকে বাস্তবতার চোখে দেখা হয়। অভিযুক্ত করা হয় উভয়কেই। সেহেতু সেসব দেশে এরকম অভিযোগ এবং অভিযোগে মামলা খুব বেশি দায়ের হয় না।
প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে আমরা সেকেলে ধ্যান-ধারণা নিয়েই পথ চলব?
-এ প্রশ্ন দেশের সচেতন মহল, আইন প্রণেতা, নীতি-নির্ধারকদের কাছে।
এ প্রসঙ্গে একটি গল্প বলি তাহলে- একটা মেয়ে কোর্টে গেছে তার বয়ফ্রেন্ডের নামে কেস করতে। মামলাটা ছিল তার বয়ফ্রেন্ড তাকে ধর্ষণ করেছে। জজ সাহেব সব কিছু জানতে চাইলে মেয়েটি তাদের রিলেশনের সব কিছু জানাল। জজ সাহেব সব কিছু শুনে মেয়েটার হাতে ৫ টাকার একটি কয়েন দেন এবং বলেন তুমি যদি এক সপ্তাহ পর এই কয়েনটা আমাকে ফেরত দিতে পার তাহলে তুমি নির্দোষ। আর ছেলেটাকে বললেন, তুমি যদি মেয়েটার কাছ থেকে ওই কয়েনটা আনতে পার তাহলে তুমি নির্দোষ। এক সপ্তাহ পর মেয়েটি জজ সাহেবের কাছে কয়েনটা ফিরিয়ে দিল। জজ সাহেব মেয়েটিকে প্রশ্ন করলেন– ছেলেটি তোমার কাছ থেকে কয়েনটি নেওয়ার চেষ্টা করেনি?
মেয়েটা বলল– হ্যাঁ স্যার নেয়ার অনেক চেষ্টা করেছে। আমাকে লাখ টাকার লোভও দেখিয়েছে কিন্তু আমি দেইনি।
এসব শোনার পর জজ সাহেব বললেন– এইভাবে তুমি তোমার ইজ্জতটাও বাঁচাতে পারতে কিন্তু তুমি বাঁচাওনি। দু’জনেই স্বেচ্ছায় রুম ডেট করেছ। এখন যখন ব্রেকাপ হয়েছে তখন ছেলেটা ধর্ষক হয়ে গেছে।
সব সময় ছেলেরা দোষী হয় না। অনেক সময় মেয়েরাও দোষী হয়।
চমৎকার!
প্রকৃত বাস্তবতা তাই।
আহা, গল্পের এরকম চরিত্রের জজ যদি সব আদালতে থাকতেন!
তাহলে ধর্ষণ জিরো ডিজিটে আসত।
একুশে সংবাদ/না.প্র/এ.জে