AB Bank
  • ঢাকা
  • শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

চাঁদপুর শহরে ছায়াবানী মোড়ে ময়লার ডাস্টবিন মিশন রোডে, অসন্তোষ স্থানীয়রা



চাঁদপুর শহরে ছায়াবানী মোড়ে ময়লার ডাস্টবিন মিশন রোডে, অসন্তোষ স্থানীয়রা

চাঁদপুর শহরের ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকা মিশন রোডের চার রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশে স্থাপন করা হয়েছে একটি বড় আকারের ময়লার ডাস্টবিন। পৌর কতৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী, পথচারী, ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকরা।

অভিযোগ উঠেছে, এই ডাস্টবিনের কারণে পুরো এলাকায় নেমে এসেছে পরিবেশ বিপর্যয় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি।

যেটি আগে ছিলো শহরের ছায়াবাণী মোড়ে। সেটিই গত কয়েক মাস আগে সরিয়ে আনা হয়েছে মিশন রোডের মোড়ে বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশে। বর্তমানে এটি যেন একটি ময়লার পাহাড়ে পরিণত হয়েছে। ময়লা-আবর্জনায় ভরে গিয়েছে রাস্তাঘাট, বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে অসহনীয় দুর্গন্ধ। জনবহুল এ এলাকায় দিনে-রাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে পশু-পাখি, ছড়িয়ে দিচ্ছে নোংরা ও জীবাণু।

সরজমিনে দেখা গেছে ৫ আগস্টের পর থেকে গত কয়েকমাস ধরে শহরের মিশন রোড মোড়ের বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশে ময়লা এবং মাটি ফেলে কিছু জায়গা ভরাট করে সেখানে প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনার স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। আর সেখান থেকে ভ্যান গাড়ি করে পরিছন্ন কর্মীরা ধীরে ধীরে তা নিচ্ছে স্বর্ণখোলা এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ এখানে প্রতিদিন যেসব ময়লা ফেলা হয় সেগুলোকে পাশের খালি বালুর মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রাখা হয়। পরিছন্নকর্মীরা ওই ময়লার স্তূপ ঘেটে সেখান থেকে তারা বিভিন্ন প্লাসিট ও লোহা লংকর সহ প্রয়োজনীয় জিনিস বেছে রাখেন ভাংরি দোকানের বিক্রি করার জন্য। যার ফলে পুরো এলাকা জুড়ে ময়লার দুর্গন্ধে আরো বেশি ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি পৌরসভা থেকে যেসব ব্লিসিং পাউডার দেয়া হয় সেগুলো তারা প্রয়োজন হারে ব্যবহার করেননি।

ডাস্টবিনটির পাশে অবস্থিত চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী শাহী জামে মসজিদ। মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা জানান, ডাস্টবিন থেকে ছড়ানো গন্ধে নামাজে মনোযোগ ধরে রাখা সম্ভব হয়না।

মুসল্লি মাওলানা ইমরান হোসেন, সামু মিজি, মামুন মিজি, কাদির খান, হাফেজ মোল্লা, লিয়াকত খানসহ একাধিক ব্যক্তিরা বলেন, গত কয়েক মাস ধরে মসজিদের পাশে এমন দুর্গন্ধ পরিবেশ মেনে নেওয়া যায় না। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে এই গন্ধে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এটা ধর্মীয় অনুভূতিরও অবমাননা।

এছাড়া ডাস্টবিনটির অদূরেই অবস্থিত ড্যাফোডিল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী এই পথ দিয়ে যাতায়াত করে। দুর্গন্ধ আর নোংরা পরিবেশে তাদের শরীরে রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা।

অভিভাবক তানিয়া রহমান বলেন,আমার সন্তান প্রতিদিন স্কুলে যায় এই ডাস্টবিনের পাশ দিয়ে। মাঝে মাঝেই ওর ভেতর থেকে বমির ভাব হয়। এই বয়সে এমন স্বাস্থ্যঝুঁকির কোনো মানে হয় না।

ডাস্টবিনটির ঠিক পাশেই অবস্থিত জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান চাঁদপুর নতুন বাজার ফায়ার সার্ভিস। রাস্তার পাশে উপচে পড়া ময়লার কারণে জরুরি সেবা কার্যক্রমেও ব্যাঘাত ঘটছে। ময়লার দুর্গন্ধে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, দুর্গন্ধে কর্মরত সদস্যদের কাজ করতেও সমস্যা হয়। বিশেষে যারা প্রতিদিন অফিসে নিয়মিত ডিউটি করেন, তারা ঠিকমত নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এটি কোন পরিকল্পনার ভিত্তিতে এখানে বসানো হয়েছে বুঝে আসছেনা।

মিশন রোডের এই মোড়ে রয়েছে একাধিক ফার্মেসি, মুদি দোকান, কনফেকশনারি ও খাবারের হোটেল। হোটেল ও দোকান মালিকরা জানান, এই ডাস্টবিনের কারণে ব্যবসা এখন চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ক্রেতারা রাস্তার দূর থেকেই ফিরে যায়। দোকানে বসেও টিকতে পারি না। পৌরসভা যদি ডাস্টবিন না সরায়, আমরা আন্দোলনে যাবো।

মিশন রোডের মোড়ে ময়লার এমন স্তূপ নিয়ে পরিছন্নকর্মীরা বলেন, আমাদের গাড়িগুলো মোটর লাগিয়ে দিলে আর এমন দুর্ভোগ পোহাতে হবেনা। কারন, পায়ে চালানো ভ্যান গাড়ি দিয়ে সবাই এত দুর ময়লা নিতে চায়না। আমাদের সবার গাড়ি গুলোতে যদি, পৌরসভার পক্ষ থেকে মোটরচালিত করে দেয়। তাহলে হয়তো আমরা সবাই বিভিন্ন বাসা বাড়ির ময়লা গুলো এখানে না ফেলে সরাসরি স্বর্ণখোলা এলাকায় নিয়ে ফেলতে পারবো।

জানা গেছে এই ডাস্টবিনটি অপসারণের দাবিতে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ কয়েক মাস পূর্বে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা ও মিশন রোডের ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানাচ্ছি, ডাস্টবিনটি যেনো শহরের নির্জন এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়। তা না হলে এলাকাবাসীকে নিয়ে বড় আন্দোলনে যাবো।

মিশন রোড চাঁদপুর শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা। এখানে মসজিদ, স্কুল, সরকারি অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঘিরে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের চলাচল। এই এলাকায় একটি স্থায়ী ময়লার ডাস্টবিন থাকা শহরবাসীর জন্য একধরনের অপমান ও স্বাস্থ্যঝুঁকি। এলাকাবাসী, মুসল্লি, ব্যবসায়ী ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে চাঁদপুর পৌর প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি, ডাস্টবিনটি অতি দ্রুত অপসারণ করে যথোপযুক্ত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হোক।

 

একুশে সংবাদ/চাঁ.প্র/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!