AB Bank
  • ঢাকা
  • শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কালুরঘাট ট্র্যাজেডি: তদন্ত প্রতিবেদনে ট্রেনচালকই দোষী



কালুরঘাট ট্র্যাজেডি: তদন্ত প্রতিবেদনে ট্রেনচালকই দোষী

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য ট্রেনচালক গোলাম রসুল ও সহকারী চালক মোহাম্মদ আমিন উল্লাহকে দায়ী করেছে রেলওয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশও করেছে কমিটি।

পবিত্র ঈদুল আজহার দুদিন আগে, গত ৫ জুন রাতে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর পূর্ব প্রান্তে ঘটে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি সেতুতে ওঠার সময় চারটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, দুটি মোটরসাইকেল ও একটি আইসক্রিমবাহী ভ্যানকে ধাক্কা দিয়ে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অটোরিকশাচালক তৌহিদুল ইসলাম ওরফে তুষার (২৯) এবং তাঁর অটোরিকশায় থাকা দুই বছরের শিশু মেহেরিমা নূর। আহত হন অন্তত ১৬ জন।

দুর্ঘটনার পর শিশুটির নিথর দেহ নিয়ে বাবা সাজ্জাদুন নূরের আহাজারির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। আহত হন মেহেরিমার মা জুবাইরা ইসরাও। ঈদের ছুটিতে তাঁরা গ্রামের বাড়ি বোয়ালখালী যাচ্ছিলেন।

দুর্ঘটনার পরপরই ট্রেনচালক, সহকারী চালক, গার্ড সোহেল রানা এবং অস্থায়ী গেটকিপার মো. মাহবুবকে সাময়িক বরখাস্ত করে রেলওয়ে। তবে তদন্ত কমিটি গার্ড ও গেটকিপারের কোনো দায় খুঁজে পায়নি।

১৯ জুন বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম), চট্টগ্রাম এ বি এম কামরুজ্জামানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পাঁচ সদস্যের কমিটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, চালক ডেড স্টপে না দাঁড়িয়ে ও গেটকিপারের সংকেত উপেক্ষা করে ট্রেন চালিয়েছেন প্রায় ২৬–২৭ কিমি গতিতে। যেখানে নিয়ম অনুযায়ী ট্রেনটিকে থেমে সই করে সেতু অতিক্রমের অনুমতি নিয়ে ১০ কিমি বেগে চলার কথা ছিল। নিয়ম মানলে সেতুতে থাকা যানবাহন সময়মতো পার হতে পারত এবং দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো।

সুপারিশসমূহ

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তদন্ত কমিটি ১০টির বেশি সুপারিশ করেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

  • কালুরঘাট সেতুর দুই প্রান্তে দায়িত্বরত গেটকিপার ও ট্রেনচালকদের জন্য ওয়াকিটকি সরবরাহ।

  • মোবাইল ফোনে নেটওয়ার্ক না থাকার ঝুঁকি এড়াতে স্থায়ী যোগাযোগব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

  • সেতুর দুই প্রান্তে অভিজ্ঞ ও স্থায়ী গেটকিপার নিয়োগ।

  • অতিরিক্ত গেট প্রতিবন্ধক স্থাপন।

  • সেতুতে দুর্ঘটনার কারণ ব্যাখ্যা করে বোর্ড স্থাপন, যাতে সবাই সচেতন থাকে।

  • স্থানীয় মোটরসাইকেল চালকদের নিয়ম মানতে বাধ্য করতে প্রশাসন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সচেতনতামূলক কমিটি গঠন।

  • ডিআরএম ও অন্যান্য বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়মিত পরিদর্শন ও রেজিস্টারে মতামত লিপিবদ্ধ করার বাধ্যবাধকতা।

  • গোমদণ্ডী ও জানআলীহাট স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার সময় ডেড স্টপ এবং সেতুর গতিনিয়ন্ত্রণ নিয়ে ট্রেনচালককে অবহিত করা।

বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক এ বি এম কামরুজ্জামান বলেন, “তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। কারা দায়ী, কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে ও ভবিষ্যতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার—সব বিষয়েই কমিটি সুপারিশ দিয়েছে। আমরা তা খতিয়ে দেখছি এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” তবে তিনি বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি।

রেলওয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, "চালক ও সহকারী চালক তাদের দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা করেছেন। এ কারণে তাঁরা কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন না।"

 

একুশে সংবাদ/চ.প্র/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!