এ যেন এক নীরব বিপর্যয়—মরে যাচ্ছে শুধু মাছ নয়, মানুষের স্বপ্ন, শ্রম, জীবনের সংগ্রাম।বাংলাদেশের মাছ উৎপাদনের অন্যতম কেন্দ্র ময়মনসিংহের ভালুকায় সাম্প্রতিক দিনে দেখা দিয়েছে মাছের মারাত্মক মড়ক। এটি শুধু একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং একটি জীবন-ভাঙার দলিল।
তীব্র তাপদাহ, হঠাৎ বৃষ্টিপাত, আর মুরগির বিষ্ঠা থেকে সৃষ্ট অ্যামোনিয়া ও হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসে মাছের প্রাণ যেন দম আটকে মারা যাচ্ছে।
উপজেলার তথ্য মতে, ভালুকা পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মাছের খামার রয়েছে। এর মধ্যে বড় খামার দুই হাজার, ছোট খামার প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার। এছাড়া রয়েছে ১০ হাজারের বেশি পুকুর। এখন অধিকাংশ খামারেই দেখা দিয়েছে মাছ মারা যাওয়ার ঘটনা, যার ফলে কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা বলছেন "শেষ হয়ে গেছি ভাই"
রাংচাপড়া গ্রামের চাষি মাজহারুল ইসলাম জানান, “২০ একরের একটি খামার আছে কাওরাইদ বিলে। পাঙ্গাস ও দেশি মাছ চাষ করেছিলাম। বিক্রির উপযুক্ত সময় ছিল। কিন্তু হঠাৎ তাপমাত্রা ও গ্যাসের কারণে মাছ ভেসে উঠে মারা যাচ্ছে।”
এমনই অভিযোগ ধাইরাপাড়ার নজরুল ইসলাম ও ভাটগাঁও গ্রামের মোস্তফা কামালেরও। তাদের সবারই একই আর্তনাদ—“শেষ হয়ে গেছি ভাই।”
ভালুকা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ছাইদুর রহমান জানান—“তীব্র গরমে পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে যেসব খামারে পোল্ট্রির বিষ্ঠা ব্যবহার করা হচ্ছে, সেখানে অ্যামোনিয়া গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে, ফলে মাছ ভেসে উঠছে ও মারা যাচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত খামারগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণাও চলছে।”
একজন অভিজ্ঞ মাছচাষি বলেন—“ভালুকায় বিল ছাড়া অধিকাংশ পুকুরে পোল্ট্রি লিটার ব্যবহার করা হয় না। যেসব পুকুরে মাছ মারা গেছে, সেগুলোর বেশিরভাগে পাঙ্গাসের সঙ্গে অতিঘনত্বে চাষ হয়েছে। তাই তাপমাত্রা বাড়লেই অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়।”
তিনি আরও বলেন—“পাঙ্গাস ধরার পর পুকুরে থাকা দেশি মাছ মারা যাওয়া স্বাভাবিক। পাঙ্গাস বিক্রির সঙ্গে সঙ্গেই দেশি মাছও বাজারজাত করা উচিত। এছাড়া জিওলাইট, চুন, ও পানির মান নিয়ন্ত্রণে রাখলে অনেক ক্ষতি এড়ানো সম্ভব।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন—“২০ বছর ধরে মাছ চাষ করছি, এখনও কোনো মৎস্য কর্মকর্তাকে মাঠে দেখিনি। কৃষি বিভাগ যেমন মাঠে সক্রিয়, তেমনি যদি ফিসারিজ বিভাগও হতো, তাহলে ভালুকার চিত্র ভিন্ন হতে পারতো।”
ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন—“বেশিরভাগ ফিশারিতে কম-বেশি পোল্ট্রির বিষ্ঠা ব্যবহার করা হয়। তাই মাছের মড়ক প্রকট আকার ধারণ করেছে। এটি কেবল প্রাকৃতিক না, আমাদের ব্যবস্থাপনারও ঘাটতি রয়েছে। এখনই সতর্ক না হলে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে।”
এই দুঃসময়ে পাশে আছেন যিনি—তিনি আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান মামুন
এই সংকটে ভালুকার মানুষ যাঁর নাম সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা ও আস্থার সঙ্গে উচ্চারণ করছেন, তিনি হলেন—আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান মামুন,সদস্য, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ ও আহ্বায়ক সদস্য, ভালুকা উপজেলা বিএনপি।
মানুষের দুঃসময়ে নির্ভরতার প্রতীক এই জননেতা বলেন—“আমি আপনাদের ভাই, সন্তান, একজন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মী হিসেবে বলতে চাই—আপনাদের যেকোনো প্রয়োজনে আমি পাশে আছি এবং থাকব ইনশাআল্লাহ।”
তিনি আরও বলেন—“প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে আমাদের সক্রিয় হতে হবে। সরকার ও প্রশাসনের উচিত দ্রুত সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা। মাছচাষ আমাদের অর্থনীতির একটি বড় খাত, এটিকে রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।”
ভালুকার মানুষ জানে—বিপদের দিনে যার ফোন নম্বর সবার আগে ডায়ালে আসে, তিনি হলেন মোস্তাফিজুর রহমান মামুন।
তিনি শুধু আজ নয়, প্রতিটি ক্রান্তিকালে ছিলেন, আছেন, থাকবেন।
তার আহ্বান—“যেকোনো প্রয়োজনে আমাকে জানালেই হবে। আমি আপনাদের পাশে আছি, আগেও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব ইনশাআল্লাহ।”
এই সংকট আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে—আমাদের আরও সচেতন হতে হবে, মাঠপর্যায়ের প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হতে হবে, এবং নেতৃত্বে থাকতে হবে এমন কাউকে, যিনি মানুষের পাশে থাকেন সঙ্কটের দিনে।
আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান মামুন যেমন আজ থেকেছেন—আমরা চাই, ভবিষ্যতেও তার মতো উদ্যোগী ও মানবিক নেতৃত্বই হোক ভালুকার আশা।
একুশে সংবাদ/ম.প্র/এ.জে