নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ‘অতিরিক্ত পুলিশ সুপার’ পরিচয়ে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য জাকারিয়া আহমেদ তপাদার ওরফে রাজন (৩৪) অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়েছে।
তাকে শনিবার (১৪ জুন) দিবাগত রাতে রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার বাশার পুলিশ বক্স সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ডাকাতি প্রস্তুতির সময় সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আটক করা হয়। পরে তার দেহ তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সে দীর্ঘদিন ধরে ডিবি পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পরিচয়ে মহাসড়কে বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি, ছিনতাই ও সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল।
আটক জাকারিয়া সিলেট জেলার জকিগঞ্জ থানার কসকনকপুর এলাকার বাসিন্দা এবং মৃত আব্দুল ছবর তাপাদারের ছেলে।
তল্লাশিতে তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়—তিনটি ‘ডিবি পুলিশ’ লেখা কটি (জ্যাকেট), যার সামনের অংশে পুলিশের লোগো সংবলিত ব্যাজ ছিল। এছাড়াও একজোড়া হ্যান্ডকাফ, পুলিশের টুপি, আইডিকার্ড, একটি কালো ব্যাগে রাখা ১৫-১৬ ইঞ্চি দীর্ঘ ধারালো অস্ত্র, তিনটি ওয়াকিটকি সেট, দুটি বাটন মোবাইল, একটি সীমবিহীন স্মার্টফোন, একটি খেলনা পিস্তল।
পুলিশ আরও জানায়, তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ওয়াকিটকি, ডিভাইস ও মোবাইলফোন ব্যবহার করে সে তার সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাকারিয়া স্বীকার করেছে, সে বিভিন্ন সময়ে সরকারবিরোধী পরিকল্পনা ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। ঢাকায় তার নেতৃত্বে সক্রিয় রয়েছে আরও অন্তত ১৪ জন সদস্য, যারা বর্তমানে পলাতক।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ‘জাকারিয়া একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। সে দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পরিচয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। তার বিরুদ্ধে উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে গ্রেপ্তার জাকারিয়ার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। জাকারিয়ার গ্রেপ্তারের ঘটনায় চক্রের অন্যান্য সদস্যদেরও শনাক্ত ও আটকের চেষ্টা চলছে।
একুশে সংবাদ/না.প্র/এ.জে